শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

কাপ্তাই হ্রদে মিলছে না মাছ বিপাকে ২০ হাজার জেলে

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

কাপ্তাই হ্রদে মিলছে না মাছ বিপাকে ২০ হাজার জেলে

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মিলছে না মাছ। ভরা মৌসুমেও মাছশূন্য জেলার ফিশারিঘাট। এতে বিপাকে পড়েছেন প্রায় ২০ হাজার জেলে পরিবার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কচুরিপানা অপসারণ ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে হ্রদ পুনরুদ্ধার করা না হলে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে মিঠা পানির মাছের ভান্ডার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কাপ্তাই হ্রদ।  রাঙামাটি বিএফডিসির সূত্রে জানা যায়, গত বছরের নভেম্বর থেকে কমতে থাকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের মে থেকে আগস্ট চার মাস হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। সেপ্টম্বরে হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হয়। অন্যান্য বছর এ সময়ে প্রচুর মাছ ধরা পড়লেও এবার চিত্র ভিন্ন। হ্রদে জেলেদের জালে মিলছে মাছ। বন্ধ হওয়ার পথে মৎস্যজীবীদের ব্যবসা-বাণিজ্য। ইতোমধ্যে বেকার হয়ে পড়েছেন অনেক শ্রমিক-কর্মচারী। হ্রদে হঠাৎ কেন মাছ উৎপাদন কমেছে এমন প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেনি রাঙামাটি মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আজহার আলী। তিনি বলেন, আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে হ্রদে মাছ সঠিক প্রজনন করতে পারছে না। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য প্রজননের চারটি চ্যানেল আছে (বরকল, কাচালং, চেঙ্গি ও রীক্ষ্যং)। এর মধ্যে মৃতপ্রায় রীক্ষ্যং ও চেঙ্গি। বিলুপ্তের পথে কাচালং। শুধু বরকল চ্যানেল সচল রয়েছে। এ চ্যানেলটি নষ্ট হলে হ্রদের মাছ আর সুষ্ঠু প্রজনন করতে পারবে না। বংশ বৃদ্ধি হবে না মাছের। আজহার আলী বলেন, শুধু এ কারণেই নয়, হ্রদে মাছ আহরণের নিয়ম-নীতিও মানা হচ্ছে না। একটা সময় দিনে চারবার মাছ আহরণ করতেন জেলেরা। এখন ২৪ ঘণ্টাই মাছ আহরণ করা হয়। মা মাছ বিলুপ্তির এটাও একটা কারণ। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক লে. কর্নেল তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এ হ্রদ দেশের কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের অন্যতম স্থান। প্রতি বছর সারা দেশে প্রাকৃতিক প্রজনন করা মাছের শতকরা ৩১ ভাগ কাতল, ১২ ভাগ রুই, ৭ ভাগ মৃগেল ও ৫১ ভাগ কালিবাউশের প্রজনন হয় এখানে। যা দেশের সামগ্রিক মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দীর্ঘদিন হ্রদ ড্রেজিং না হওয়া এবং কচুরিপানার জঞ্জালের কারণে মাছ আহরণ কমতে শুরু করেছে।

সর্বশেষ খবর