সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

সুনামগঞ্জের মাউতি বাঁধ ভেঙে ডুবছে ছায়ার হাওর

পানির নিচে ধান কৃষকের মাথায় হাত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের মাউতি বাঁধ ভেঙে ডুবছে ছায়ার হাওর

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার মাউতি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফসল রক্ষাবাঁধ ভেঙে ডুবছে তিন জেলায় বিস্তৃত ছায়ার হাওর। তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের সোনালি ধান। গতকাল হাওরের মাউতি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করে। এর আগে শনিবার রাতে ওই বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলাজুড়ে এই হাওরের অবস্থান। তবে বেশির ভাগ অংশ পড়েছে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায়।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, ছায়ার হাওরের প্রায় অর্ধেক ফসল এরই মধ্যে কাটা হয়েছে। বাকি অর্ধেক তলিয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ বলছে, এ মৌসুমে এই হাওরে ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। তাদের দাবি, প্রায় ৯০ ভাগ ফসল কাটা হয়েছে। পানি ঢোকার পর কৃষকরা আধাপাকা ধান কাটার চেষ্টা করছেন। তবে গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানির উচ্চতা বাড়ায় ধান কাটা সম্ভব হয়নি। রাতেই (রবিবার রাত) পুরো হাওর তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বছরের একমাত্র ফসল তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা। দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাদের কপালে। কৃষক শহীদ আহমদ জানান, ছায়ার হাওরে রোপণ করা স্থানীয় এবং ব্রি-২৮ জাতের ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়ে গেছে। উফশী জাতের ধান সবে কাটা শুরু হয়েছে। সেগুলো মাত্র পাকতে শুরু করেছে। আরও ১০ দিন সময় পেলে সব কাটা সম্ভব হতো। ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু বলেন, ছায়ার হাওরের অর্ধেক ফসল কাটা হয়েছে। বাকি অর্ধেক মাউতি বাঁধ ভাঙায় তলিয়ে যাচ্ছে। বাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ার পরই প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) লোকজন সংস্কারে এগিয়ে এলে কৃষকের কপাল পুড়ত না। সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র বলেন, ছায়ার হাওরে ৯০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। আরও দু-এক দিন সময় পেলে শতভাগ ধান কাটা সম্ভব হতো। পচে গেছে ৩৫০ হেক্টর জমির ধান : ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, নাসিরনগরের হাওরাঞ্চলে পানিতে তলিয়ে থাকা জমির ধান পচতে শুরু করেছে। কিছু ভালো ধান পাওয়া যায় কি না সেই আশায় পানির নিচ থেকে ধান কাটার চেষ্টা করছেন কৃষক। কৃষকদের দাবি, পচা ধান নিজের জন্য নয়, গরুর খাবারের জন্য কেটে আনছেন। রোদে শুকিয়ে যদি খড় হিসেবে গরুকে খাওয়ানো যায় এজন্যই তারা পচা ধান কাটার চেষ্টা করছেন। কৃষকরা জানান, এক সপ্তাহ আগে উজান থেকে আসা পানির তোড়ে উপজেলার মেদির হাওর, আকাশি হাওর ও বালিয়াজুরি বিলের কমপক্ষে ৩৫০ হেক্টর জমির আধাপাকা ধান তলিয়ে গেছে। পানি না নামায় আধাপাকা ওই ধানে পচন ধরেছে। বছরের একমাত্র ফসল হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেম ও তমা রানী দেব বলেন, হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর