মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

বাঁশতলায় পাঠদান

মেহেরপুর প্রতিনিধি

বাঁশতলায় পাঠদান

গাংনীর ধানখোলা ইউনিয়নের কসবা ডিপিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ না থাকায় খোলা মাঠে বাঁশতলায় ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বাঁশের ছায়ায় সারি সারি বেঞ্চ বসানো। আর জাম গাছের সঙ্গে পেরেক লাগিয়ে ব্ল্যাকবোর্ড ঝোলানো। এভাবেই পাঠদান চলছে কয়েক বছর ধরে। বৃষ্টি ও মেঘ দেখলেই ছুটি হয়ে যায় বিদ্যালয়টি। পুরনো ভবনে কয়েকটি শ্রেণির পাঠদান চললেও বসতে হয় গাদাগাদি করে। শুধু শ্রেণিকক্ষ সংকট নয়, রয়েছে শিক্ষক সংকটও। শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রচণ্ড গরমের ফলে শ্রেণিকক্ষে ঠাসাঠাসি বসে ক্লাস করা যাচ্ছে না। যেদিন বেশি ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসে কক্ষ সংকটের ফলে সেদিন অনেকে বাইরে বেঞ্চ পেতে ক্লাস করে। খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করায় শীতের সময় খুব শীত এবং গরমের সময় রোদে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। দ্রুত স্কুলটিতে নতুনভাবে ভবন নির্মাণ করে শিক্ষার পরিবেশ দ্রুত ফিরিয়ে আনা হবে এমনটি প্রত্যাশা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয়সূত্রে জানা গেছে, এটি জাতীয়করণ হয়েছে ২০১৩ সালে। করোনায় অনেক শিক্ষার্থী ঝরে গেলেও বর্তমানে ৭২ ছাত্রীসহ ১৪৯ জন নিয়মিত ক্লাস করে। ভবন, বেঞ্চসহ নানা সংকট নিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি। শিক্ষকস্বল্পতার কারণে ঠিকমতো ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। পাঁচজন শিক্ষকের জায়গায় চারজন দিয়ে পাঠদান করানো হয়। বিভিন্ন মহলে দেনদরবার করেও ভবন, বেঞ্চ ও স্কুলের বাউন্ডারি নির্মাণ করা যায়নি আজও পর্যন্ত। প্রধান শিক্ষক আফজালুল হক বলেন, স্থানীয়দের চেষ্টায় ৩৩ শতাংশ জমির ওপর ১৯৮৯ সালে এ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। এলাকার শিক্ষানুরাগী মরহুম আবদুল মান্নান, হাজী খেজমত আলী, ইছাহাক আলী ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক আফজালুল হক অজপাড়াগাঁয়ে শিক্ষার আলো জ্বালতে বিদ্যালয়টি গড়ে তোলেন। নানা প্রতিকূলতা পাশ কাটিয়ে ২০০৩ সালে সরকারিভাবে স্বল্পপরিসরে অবকাঠামো গড়ে উঠলেও বর্তমানে সেই বিল্ডিংয়ে জায়গাসংকুলন হচ্ছে না। ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নিতে হয়। তিনি আরও জানান, নতুন ভবন, প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক, বেঞ্চ, সীমানাপ্রাচীর দাবি করে ইতোমধ্যে শিক্ষা অফিসার, ইউএনও, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ত্রাণ অধিদফতরে আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনো কোনো আশানুরূপ সাড়া কোনো মহল থেকেই পাওয়া যায়নি। গাংনী উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহজাহান রেজা বলেন, ‘ভবন ও সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে অফিসে আমরা একটি আবেদন পেয়েছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।’

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম বলেন, জেলা প্রশাসককে অভিহিত করা হয়েছে। ‘সরকারি বিদ্যালয়ে এমন সমস্যা থাকার কথা নয়। তার পরও আমরা বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে দেখব।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর