মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বগুড়ার ৪৮ রেলক্রসিংয়ে মৃত্যুঝুঁকি

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়ার ৪৮ রেলক্রসিংয়ে মৃত্যুঝুঁকি

বগুড়ার ৭০ কিলোমিটার রেল সড়কের ৪৮টি রেলক্রসিং এখন মৃত্যুঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। এসব রেলক্রসিংয়ে মাঝে মধ্যে ঘটছে দুর্ঘটনা। জেলার মিটার গেজ রেল সড়কে অধিকাংশ লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত থাকলেও এ ব্যাপারে আজ অবধি নেওয়া হয়নি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা। ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণহানিসহ ব্যাপক জানমালের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেই চলছে। রেলওয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম বগুড়ার সান্তাহার থেকে পূর্বে সোনাতলা পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল সড়কে বিভিন্ন ধরনের ৪৮টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এ জেলার ৭০ কিলোমিটার রেলপথে প্রতিদিন ১৪টি ট্রেন যাতায়াত করে। এ পথে অনুমোদিত রেলক্রসিং ৪৮টির মধ্যে গেটম্যান বা বেরিয়ার রয়েছে ৩০টিতে। বাকি ১৮টিসহ অনুমোদনহীন আরও ২৫টি রেলক্রসিং এখনো অরক্ষিত। এর মধ্যে ১০টি রেলক্রসিং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া শহরের সঙ্গে পূর্ব বগুড়ার যোগাযোগ রক্ষাকারী করতোয়া রেল সেতু দিয়ে অধিকাংশ জনগণ পায়ে হেঁটে চলাচল করায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। জেলার সোনাতলা থেকে সান্তাহার পর্যন্ত রেলওয়ের প্রকৌশল ও ট্রাফিক বিভাগের চারটি ক্যাটাগরিতে যে ৪৮টি স্থানে লেভেল ক্রসিং রয়েছে এর মধ্যে ‘স্পেশাল’ এবং ‘এ’ ক্যাটাগরির মাত্র ৮টি ক্রসিং সুরক্ষিত। ‘স্পেশাল’ ক্যাটাগরির ৬টি ক্রসিং-এ ২৪ ঘণ্টায় তিনজন করে গেটম্যান ও ‘এ’ ক্যাটাগরির দুটি ক্রসিংয়ে দুজন গেটম্যান দায়িত্ব পালন করেন। স্পেশাল ক্যাটাগরির ক্রসিংগুলো হলো- শহরের উপকণ্ঠে পুরান বগুড়া, সরকারি আজিজুল হক কলেজের সামনে, শহরের চকযাদু রোড, থানা রোড ও রাজাবাজার এবং গাবতলী স্টেশনের পশ্চিমের রেল ক্রসিং। এ ছাড়া গাবতলী স্টেশন এবং সান্তাহার জংশনে প্রবেশের আগের ক্রসিংটি ‘এ’ ক্যাটাগরির। ‘সি’ ক্যাটাগরির ৩৮টি অরক্ষিত ক্রসিংয়ের মধ্যে ১০টি জনবহুল এলাকায়। ফলে এসব ক্রসিং ক্রমান্বয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ ক্রসিং হলো  শহরের চেলোপাড়া, কৈচড়, সাবগ্রাম, আকাশতারা, আদমদীঘি স্টেশনের পশ্চিমে, আলতাফনগর স্টেশনের পূর্বে এবং সৈয়দ আহমেদ কলেজ স্টেশনের পূর্বে, কাহালু উপজেলার স্টেশনের পূর্বের রেল ক্রসিংগুলো অন্যতম। শহরের কামারগাড়ীতে বগুড়া রেল স্টেশনের উত্তর পাশে আন্তঃথানা বাস টার্মিনাল নির্মিত হওয়ায় যাত্রীরা অবাধে লাইনের ওপর দিয়ে চলাচল করে থাকে। আজও নিরাপত্তা রক্ষায় কোনো ক্রসিং নির্মাণ করা হয়নি। এ ছাড়া শহরের ১ নম্বর, ২ নম্বর ও ৩ নম্বর রেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। মূল শহরের মধ্যে তিনটি রেল ক্রসিং থাকায় মৃত্যুঝুঁকি যেমন বেড়েছে তেমনি বিভিন্ন ধরনের অবৈধ মার্কেট গড়ে ওঠায় লোকজনের যাতায়াত বেড়েছে। সে হিসাবে বগুড়ার ৪৮টি রেলক্রসিং এখন মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে।

সর্বশেষ খবর