রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

চরফ্যাশনে ১ লাখ পরিবার নদী ভাঙনের কবলে

সংস্কার হয়নি ১৩ কিলোমিটার বাঁধ

এম আবু সিদ্দিক, চরফ্যাশন (ভোলা)

চরফ্যাশনে ১ লাখ পরিবার নদী ভাঙনের কবলে

ভোলার চরফ্যাশনে নদীতে হারিয়ে যাচ্ছে লোকালয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বৈরী আবহাওয়া, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হয় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর বেড়িবাঁধ এলাকার ৫০ হাজার পরিবারের। বাপ-দাদার ভিটেমাটির মায়ায় এসব পরিবার বাঁধের ঢালে বসবাস করেছেন দীর্ঘদিন ধরে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পর্যায়ক্রমে উপজেলার প্রায় ১০০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করেছে। বিভিন্ন এলাকায় এখনো ১৩ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় প্রায় ১ লাখ পরিবারের ৩ লাখ সদস্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। তেঁতুলিয়া নদীরপাড়ের বসতি পাল্টানো বাসিন্দা কামাল মাঝি (৬৫)। তিনি সাক্ষী হয়েছেন অনেক ভাঙাগড়ার দৃশ্যপটের। তেঁতুলিয়ার ভাঙনের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘খড়-কুটোর ঘর, গবাদি পশু, চাষের জমি, এমনকি পরিবার ও জীবনসহ সবকিছু বিপদের মুখে রেখে বসবাস করতে হয় নদীরতীরের মানুষদের। ঝড়-বন্যা আর ভাঙন আমাদের নিত্যসঙ্গী। ভাঙনে ধরা গ্রামের মানুষগুলোর বারবার বসত পাল্টাতে হয়। এমনিতেই গরিব, তার ওপর বসতভিটা, চাষের জমি হারিয়ে যায় নদীভাঙনে। এখন কোনোভাবে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছি পাউবোর বাঁধের পাশে। মেঘনাপাড়ের নুরুল্লাহ মাঝি (৫৫) জানান, নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিন একর জমির ওপর বাপ-দাদার বাড়ি ছিল। মেঘনার ভাঙনে সব হারিয়ে এখন সর্বস্বান্ত। বাড়ির সবাই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। বারবার ভাঙনে সর্বস্বান্ত হয়ে এখন জমি কেনার সামর্থ্য নেই। তিনি বসবাস করছেন অন্যের জমিতে। ভোলা পাউবো, ডিভিশন-২ (চরফ্যাশন)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘এ উপজেলায় নদীভাঙন রোধে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার তীর রক্ষায় প্রায় ৮৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কুকুরি-মুকরি ও মুজিবনগরে ২০ কিলোমিটারের কাজ চলমান। কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১৩ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কারের অভাবে অরক্ষিত রয়েছে। এসব বাঁধ মেরামতে বরাদ্দের প্রক্রিয়া চলছে। বরাদ্দ পেলে বর্ষা শেষে ওইসব এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগের মাধ্যমে বাঁধ সংস্কার করা হবে। চরফ্যাশন উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন আখন বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব চরফ্যাশনের দুই তৃতীয়াংশ এলাকায় বেড়িবাঁধ দিয়ে ইতোমধ্যে ভাঙন প্রতিরোধ করেছেন। ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সর্বশেষ খবর