শনিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

শীতে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

শীতে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ

বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। গত কয়েক দিনে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষ কষ্টে দিনযাপন করছেন। বগুড়ায় শৈত্যপ্রবাহে শীত বেড়েই চলেছে। তীব্র শীতে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। সেই সঙ্গে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে দূরপাল্লার যান চলাচলে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। যানবাহনগুলো দিনের বেলায় আলো জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। সারাদিনই প্রায় সূর্যের দেখা মিলছে না। এর ফলে দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষ জুবুথুবু হয়ে পড়েছেন। দিনের বেলাও থাকছে প্রচ- শীত। শীতের প্রকোপে সন্ধ্যার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের মানুষ বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। বগুড়াসহ জেলার অন্য উপজেলাগুলোতে দুপুর পর্যন্ত থাকছে কুয়াশায় আচ্ছন্ন। ঘন কুয়াশা থাকায় প্রতিদিন তাপমাত্রা নেমে যাচ্ছে নিচের দিকে। বগুড়া স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে জেলা মিলিয়ে শীতজনিত কারণে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জন করে রোগী পাওয়া যাচ্ছে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, বগুড়ায় শীতের প্রকোপ সবে মাত্র বেড়েছে। শীত এতদিন কম ছিল। যে কারণে শীতজনতি রোগীর সংখ্যা খুবই কম। শীত বেড়ে যাওযার কারণে জেলার সব হাসপাতাল মিলিয়ে ৩০ থেকে ৫৫ জন করে রোগী পাওয়া যাচ্ছে। চিকিৎসা পাওয়ার কারণে ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে রোগী আবার সুস্থ হয়ে বাড়ি যাচ্ছে। জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ জন ডায়রিয়ায় এবং সাত শিশু ও বৃদ্ধ শ্বাসকষ্টজনিত রোগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে আরও প্রায় অর্ধশত ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, হঠাৎ করেই বগুড়ায় তীব্র শীত দেখা দিয়েছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া আছে। রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ। তবে এখনো সে হারে রোগী আসছে না। প্রতিদিন গড়ে বহির্বিভাগ মিলিয়ে ১২ থেকে ১৫ জন রোগী আসছেন চিকিৎসা নিতে। এদের কেউ কেউ আবার প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছে। দুস্থ ও নিম্ন আয়ের শীতার্ত মানুষদের খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে। ফুটপাতে ছিন্নমূল মানুষগুলো গরম কাপড়ের অভাবে কষ্টে জীবনযাপন করছেন। এ ছাড়া শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় চারদিকে শীতজনিত রোগবালাই ছড়িয়ে পড়েছে। শিশু ও বৃদ্ধরা এই শীতজনিত রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। বগুড়া রেলস্টেশনে থাকা জমির মিয়া জানান, গত কয়েক দিন হলো বগুড়ায় প্রচ- ঠান্ডা পড়েছে। আমরা কখনো রেস্টেশনে আবার কখনো ফুটপাতে রাত্রিযাপন করি। শীত বেড়ে যাওয়ায় অনেক কষ্টে আছি। সেটা গায়ে দিনে কোনো রকম থাকছি। শীত যদি আরও বেড়ে যায় তাহলে আমরা যারা রেলস্টেশনে থাকি তাদের কষ্টও বেড়ে যাবে। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু জানান, শীতের কারণে মানুষের নিউমোনিয়া, সর্দ্দি, জ্বর, কাশি, আমাশয় রোগ দেখা দিতে পারে। এ জন্য সাধারণ নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এসব রোগে ইতোমধ্যেই ঠান্ডা রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর