শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সূক্ষ্ম ফাঁসের জালে মাছের পোনা নিধন

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

সূক্ষ্ম ফাঁসের জালে মাছের পোনা নিধন

বঙ্গোপসাগারে জালে ধরা পড়া বিভিন্ন জাতের পোনা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা চর বিজয়ে জেলেরা পেতে রেখেছেন সূক্ষ্ম ফাঁসের জাল। চরজুড়ে পাতা এ জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে ইলিশের পোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ। এমন দৃশ্য দেখে পর্যটকরাও হতবাক। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা। মৎস্য বিভাগ বলছে, বারবার অভিযান চালিয়েও থামানো যাচ্ছে না এদের। ছোট মাছ মারা বন্ধ না করলে অচিরেই দক্ষিণাঞ্চলের মৎস্যভান্ডার শূন্য হয়ে পড়বে- এমনটাই জানিয়েছেন চর বিজয় থেকে ফেরা পর্যটকরা। স্থানীয় সূত্র জানায়, কুয়াকাটা থেকে দক্ষিণ-পূর্বে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গভীর সাগরে চর বিজয়ের অবস্থান। বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকলেও শীতে বিশাল আকৃতি নিয়ে জেগে ওঠে চরটি। সারা বছর এর আশপাশে থাকে জেলের উপস্থিতি। তারা চর বিজয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে ছোট ফাঁসের জাল দিয়ে মাছ শিকার করেন। অবাধে মাছের পোনা নিধন বন্ধ না হলে সাগর-নদী থেকে মৎস্যসম্পদ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মৎস্য বিশেষজ্ঞরা জানান। বিষয়টিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউএসএইড, ইকোফিস-২ ওয়ার্ল্ডফিস বাংলাদেশ-এর সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, ওই চরে বিভিন্ন সময়ে দেখেছি, জেলেরা ভাটার সময় জাল পেতে রাখেন। জোয়ার এলে ওই জালে ছোট-বড় সব সাইজের মাছ আটকে মারা পড়ে। শীত মৌসুমে অধিকাংশ রেণু পোনা চর বিজয়ের কোল ঘেঁষে আশ্রয়ের জন্য আসে। এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই ইলিশ। বাকি ২০ ভাগের মধ্যে রয়েছে তাইড়া, পোয়া, ফাইসা, বাটা, তুলারডাটি ইত্যাদি। এ ছাড়া জেলেদের জালে জড়িয়ে অতিথি পাখিও মারা যাচ্ছে। এ চরটি মৎস্য প্রজনন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন এই গবেষক। কুয়াকাটা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আখতার মোর্শেদ বলেন, সাগর ও নদীর মোহনায় তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জায়গাটা একটু দূরে হওয়ায় সার্বক্ষণিক নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে না। তার পরও সামুদ্রিক মৎস্য আইনে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। একটি মাছধরা ট্রলার জব্দ করা হয়েছে। সাত-আটবার মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে ২০ হাজার মিটার অবৈধ জাল।

সর্বশেষ খবর