মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

মগড়া তীরে অবৈধ দখলের রাজত্ব

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

মগড়া তীরে অবৈধ দখলের রাজত্ব

নেত্রকোনা শহরের প্রবর্তন ঘটেছে যে নদীর মাধ্যমে সেই মগড়া নদী আজ মৃত শীর্ণকায়। কালিগঞ্জ নামক বাজারের প্রসার ঘটেছিল একমাত্র পথ নৌকা চলাচলের মাধ্যমে। কিন্তু অবৈধ দখলের রাজত্বে আজ সেই নদীর বিলুপ্তি ঘটতে চলেছে। এক সময় গানের মতো হবে এখানে এক নদী ছিল। পুরো শহরকে সাপের মতো প্যাঁচিয়ে রাখা নদীটির পেট জুড়ে শত শত দখলের রাজত্ব। যেগুলোর বেশিরভাগ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাবেক সচিবসহ দলীয় এবং সাংবাদিক উকিল সব পেশার মানুষের নাম রয়েছে। জরিপের নাম করে কালক্ষেপণ চলছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নদী বাঁচাতে ২০১৯ থেকে সরকার অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও মগড়া বাঁচাতে নয়ছয়। ২০২০ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে নামে মাত্র উচ্ছেদ অভিযান চালায়। তাও আদালতের নির্দেশ সিএস মূলে না করে বিআরএস মূলে। ফলে কাগজে কলমে এবং বস্তিবাসীদের নামে মাত্র উচ্ছেদ অভিযান দেখানো হয়েছে। অথচ অনেক দখল এড়িয়ে কোনো রকমে ভূমি জরিপে উঠে আসা ৩১৬টি অবৈধ দখল যার মধ্যে নাম ঠিকানা দাগ ও পরিমাণসহ তালিকা রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েব সাইটে। নেত্রকোনা সদর উপজেলা ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা রুপন মিয়া, সার্ভেয়ার জাহাঙ্গীর হোসেন ও সার্ভেয়ার নাজিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত ওই তালিকায় সাতপাই মৌজাস্থ মগড়া নদীর ভূমি অবৈধ দখলদারদের নাম রয়েছে। তারপরও এসব অবৈধ দখলের ছিটেফোঁটাও উচ্ছেদ করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। এরমধ্যে জেলা প্রশাসন বি আর এস মূলে ২৯৮টি উচ্ছেদ দেখিয়েছে কাগজে পত্রে। বাকিগুলোর কিছু মামলা এবং কয়েকটিকে আবার বন্দোবস্ত দেখানো হয়েছে। পরিবেশবিদরা মনে করছেন, সরকারের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় নদী দখল। আর এসব দখলের মধ্যে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে আইনজীবী, ক্ষমতাসীন দলের নেতা, বিরোধী দলের নেতা, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ নামক শ্রেণি, কিন্ডারগার্টেন, বিভিন্ন সংগঠনসহ ধর্মীয় স্থাপনা রয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, যেগুলো মামলা রয়েছে সেগুলো ছাড়া বিআরএস মূলে সবগুলোই উচ্ছেদ হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরিপ শেষ হলে সিএস মূলে আবার উচ্ছেদ অভিযান হবে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, সিএস মূলে চিহ্নিত করণের কাজ চলছে। এখনো শেষ হয়নি।

সর্বশেষ খবর