ব্রহ্মপুত্র নদ রক্ষা, ঢাকা-ময়মনসিংহে দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন, আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্যাস সংযোগ চালুসহ ১০ দফা দাবিতে ‘নাগরিক আহাজারি’ নামে এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করে ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলন। গতকাল সকালে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, সংস্কৃতিকর্মী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝে জেগে উঠা চরে দাঁড়িয়ে সংহতি প্রকাশ করে এই প্রতিবাদ জানান। সংগঠনের সভাপতি অ্যাড. খালেকুজ্জামানের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আমিন কালাম, সংগঠনের নেতা অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক মিল্লাত, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু, অ্যাডভোকেট শিব্বির আহমেদ লিটন, সাইফুল ইসলাম পান্নু, গ্রাহক গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ ঠিকাদার ঐক্য ফেডারেশনের জেলা সভাপতি রমজান আলী খন্দকার প্রমুখ।
জেলা নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এইচ এম খালেকুজ্জামান বলেন, বিভাগ গঠনের কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় আমরা হতাশ। ব্রহ্মপুত্র নদ খননসহ আমাদের সুনির্দিষ্ট কয়েকটি দাবি রয়েছে তা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আগামী ১৭ জুন রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটে দুই জোড়া ট্রেন চালুর দাবিতে কর্মসূচি পালন করা হবে। সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন কালাম বলেন, আয়োজকরা জানান, এই জেলার নাগরিকদের ১০ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি হলো ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা। যে নদ দিয়ে এই সময়ে লঞ্চ-স্টিমার চলার কথা সে নদ মানুষ হেঁটে পার হচ্ছে। আমরা কখনো এমনটি চাইনি। তাই নদের নাব্যতা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। জানা গেছে, দখল, দূষণ আর পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালের শেষের দিকে শুরু হয় খননকাজ। প্রায় ২ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নদের ২২৭ কিলোমিটার খনন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। খননের পর যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের সংযোগস্থল জামালপুরের কুলকান্দি থেকে কিশোরগঞ্জের টোক পর্যন্ত নদটি ৩০০ ফুট প্রশস্ত ও শুষ্ক মৌসুমে ১০ ফুট গভীর থাকবে এমনটি কথা ছিলো। ‘পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা উন্নয়নে ড্রেজিং’ শীর্ষক প্রকল্পটি আগামী ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পাঁচ বছরমেয়াদি প্রকল্পের প্রথম দুই বছর নদের ড্রেজিং এবং পরবর্তী তিন বছর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার কথা ছিল। চলতি বছরের জুন-জুলাই থেকে ঢাকা পর্যন্ত বার্জ চলার কথা ছিল। গত বছর ময়মনসিংহের এক সভায় এমন কথা জানিয়েছিলেন ব্রহ্মপুত্র নদ খননের প্রধান প্রকল্প সমন্বয়কারী প্রকৌশলী খন্দকার রাকিবুল ইসলাম।