দিনাজপুরের খানসামাসহ বিভিন্ন উপজেলায় এলএসডি বা লাম্পি স্কিন রোগের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় গরু চাষি ও খামারিদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। খামার ও গৃহস্থের বাড়িতে পালিত গবাদিপশু এ রোগে প্রতিনিয়ত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় অর্থনৈতিক ধসের শঙ্কায় খামারিরা। তবে এসব গবাদিপশুকে বাঁচাতে ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মাইকিং-এর পাশাপাশি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস বিভিন্ন এলাকায় ক্যাম্পেইন ও টিকাদান কর্মসূচি পালন করছে। এদিকে, খানসামায় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় অর্ধ শতাধিক গরু মারা গেছে বলে খামারিরা বলছেন। অপরদিকে এ পর্যন্ত ৬টি গরু মারা গেছে বলে জানান খানসামা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। কয়েকজন খামারি জানায়, লাম্পি ষ্কিন রোগে (এলএসডি) আক্রান্ত গরু প্রথম দিকে কিছুই খেতে চায় না। শরীরে জ্বর আসে। দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়। পা ফুলে যায়। এরপর সারা শরীরে দেখা দেয় প্রচুর গুটি বা চাকা। এতে লোম উঠে যায় এবং ক্ষতের সৃষ্টি হয়। আর এই ক্ষত শরীরের চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক খামারি স্থানীয় পশু চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্তদের পরামর্শে স্থানীয় বাজার থেকে ইঞ্জেকশনসহ এন্টিবায়োটিক ও প্যারাসিটামল ট্যাবলেট কিনে এনে আক্রান্ত গরুগুলোকে খাওয়াচ্ছেন। আবার একই সঙ্গে কাঁচা হলুদের রস ও খাবার সোডা মিশিয়ে গরুর শরীরে মালিশ করছেন বলে জানায়। জানা যায়, গত কয়েকদিনে খানসামার চকরামপুর গ্রামে আহিমুল ইসলামের একটি, আঙ্গারপাড়া গ্রামের হাসানুর রহমানের দুটি, সুবর্ণখুলী গ্রামে এহিয়া ইসলামের একটি, সহজপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের একটিসহ প্রায় প্রতিটি গ্রামে ২/১টি করে অর্ধ শতাধিক গরু মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক গরু ও গরুর বাছুর। তবে মারা যাওয়া গরুগুলোর মধ্যে বাছুরের সংখ্যাই বেশি। কয়েকজন পল্লী চিকিৎসক জানায়, বর্তমানে রোগটি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিটি গ্রামে গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তারা দিন-রাত গরুর চিকিৎসা দিতে হাঁপিয়ে যাচ্ছে। তারা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেই চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছেন বলেও জানান। এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, ল্যাম্পি স্কিন রোগ বর্তমানে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। এ পর্যন্ত ৬টি গরু মারা গেছে বলে জানান তিনি। এ রোঘ ছাড়াও অন্য রোগেও মারা যেতে পারে সেগুলো।