বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

পাহাড়ে বাড়ছে তেল জাতীয় ফসলের আবাদ

♦ সূর্যমুখীতে হাসছে সবুজ পাহাড় ♦ খুলেছে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দুয়ার

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে বাড়ছে তেল জাতীয় ফসলের আবাদ

রাঙামাটিতে বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অন্যান্য তেল জাতীয় ফসলের। সরিষা ও চীনা বাদামের চাষাবাদও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে এক সময়ের শখের বাগান এখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের হাতিয়ার। সেসব স্থানে বছরের পর বছর পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি হচ্ছে ফসল উৎপাদন। সূর্যমুখী ফুল থেকে আয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এর একটি ফুল থেকে যেমন তৈরি হচ্ছে তেল। তেমনি তৈরি হচ্ছে মাছের খাবারের খৈল। বাণিজ্যিকভাবেও বিক্রি হচ্ছে ফুল। এতে চাষিরা যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। তেমনি তেলের চাহিদাও মিটছে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। সূর্যমুখীর আবাদ দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থী ও পর্যটকরাও। বলা যায় সূর্যমুখীর হাসিতে হাসছে সবুজ পাহাড়। কম খরচে বেশি লাভের ফলে সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন অনেক চাষি।

রাঙামাটি কৃষি বিভাগ বলছে, রাঙামাটির ১০ উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। জেলায় এ বছর সূর্যমুখী উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৯ মেট্রিক টন। চীনা বাদাম ও সরিষাসহ তেলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২.১১ মেট্রিক টন। সূর্যমুখীর বিভিন্ন জাতের মধ্যে রয়েছে উফশী, হাইসন-৩৩, বারি-২ ও ৩। এ জেলায় হাইসন-৩৬ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখীর তেল ছাড়াও খৈল দিয়ে মাছের খাবার এবং গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যাচ্ছে। এবার সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে নানিয়ারচর উপজেলা এবং বরকলের হরিণা, ভূষণছড়া ও অ্যারাবোনিয়ায়।

কৃষি বিভাগ ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সহায়তায় উপযুক্ত চাষাবাদের কারণে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন আশা করছেন কৃষকরা। ফুলে ফুলে ভরে গেছে পুরো মাঠ। কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলার নানিয়ারচরে ৫ হেক্টর, বরকলে ২৫ হেক্টর, জুরাছড়িতে ৫ হেক্টর, লংগদুতে ২০ হেক্টর এবং বাঘাইছড়িতে ১০ হেক্টর জমি সূর্যমুখী চাষের আওতায় আনা হয়েছে। রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক আ প্রু মারমা জানান, সূর্যমুখী এক ধরনের একবর্ষী ফুলগাছ। এর বীজ হাঁস-মুরগির খাদ্য এবং তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহার হয়। বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয়। সূর্যমুখীর চাষ সারা বছর করা যায়। তবে অগ্রহায়ণ মাসে চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। দেশের উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলে তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সে.-এর নিচে হলে ১০-১২ দিন পরে বীজ বপন করতে হয়।

খরিপ-১ মৌসুমে অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠ মাসেও এর চাষ করা যায়। ১ হাজার বীজের ওজন ৬০-৬৫ গ্রাম। বীজের রং কালো এবং লম্বা ও চেপ্টা। প্রতি গাছে একটি করে মাঝারি আকারের ফুল ধরে থাকে। বপনের পর ফসল সংগ্রহ করতে ৯০-১০০ দিন সময় লাগে। তিনি আরও বলেন, চাষিদের দাবি তেল জাতীয় ফসলের জন্য তেল তৈরির মেশিন ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর