ঈদুল আজহার লম্বা ছুটিতে এবার কক্সবাজার সৈকতে মৃত্যুর মিছিলও দীর্ঘ হয়েছে। ঈদের দ্বিতীয় দিন রবিবার রাত থেকে ১৭ ঘণ্টায় চার পর্যটকসহ পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সৈকতে নেমেই পর্যটকরা চান অতল সমুদ্রের ঢেউয়ের ছোঁয়া নিতে। কিন্তু সেখানে অসতর্কতায় লাশ হচ্ছেন তারা। মুহূর্তেই আনন্দভ্রমণ বিষাদে রূপ নিচ্ছে। এক দশকে সাগরে গোসল করার সময় ভেসে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক। এর বেশির ভাগ সাগরের পানিতে নামার নির্দেশনা না মেনে গুপ্তখালে পড়ে অথবা ভেসে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। এবার ঈদের ছুটিতে এক দিনে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পাঁচজনসহ ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন পর্যটক ও একজন স্থানীয় বাসিন্দা। আরেকজনের লাশ গলিত উদ্ধার করা হয়েছে, যার পরিচয় পাওয়া যায়নি। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান জানান, সদর থানা এলাকার মধ্যে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন পর্যটক ও একজন স্থানীয়। ওসি বলেন, তিন পর্যটকের মধ্যে একজনের লাশ উদ্ধার হয় রবিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সৈকতের ডায়াবেটিস পয়েন্টে। তিনি চট্টগ্রামের ডিসি রোড এলাকার নজির আহমদের ছেলে মো. রাজিব। রাজিব বিকাল ৫টার দিকে সিগাল পয়েন্টে গোসলে নেমে ভেসে যান।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে অন্য দুই পর্যটক বাবা-ছেলে গোসলে নেমে ভেসে যাওয়ার সময় উদ্ধার হয় সৈকতের সায়মন পয়েন্ট থেকে। লাইফগার্ড কর্মীরা উদ্ধারের পর রাজশাহীর শাহীনুর রহমান ও তার ছেলে সিফাতকে হাসপাতালে নিলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাগরের নাজিরারটেক পয়েন্ট থেকে উদ্ধার হয় কক্সবাজার শহরের পশ্চিম বাহারছড়া এলাকার নুরু সওদাগরের লাশ। তিনি রবিবার বিকালে শখের বশে মাছ ধরতে গিয়ে সৈকতের শৈবাল পয়েন্ট থেকে ভেসে যান। সোমবার বাঁকখালী নদীর মোহনা থেকে উদ্ধার হয় আরও একটি অজ্ঞাত গলিত লাশ। রামু থানার ওসি মু. তৈয়বুর রহমান জানান, সমুদ্রসৈকতের হিমছড়ির পেঁচারদ্বীপ এলাকায় সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি লাশ উদ্ধার হয়। তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তিনিও পর্যটক বলে ধারণা করা হচ্ছে। সি সেইফ লাইফগার্ডের জ্যেষ্ঠ কর্মী সাইফুল্লাহ সিফাত জানান, বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢল নেমে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে গুপ্তখালের তৈরি হয়। যেখানে পড়লেই বিপদগ্রস্ত হচ্ছেন পর্যটকরা। নির্দিষ্ট স্থানে গোসলে না নেমে এর বাইরে নামলেই মিসিং হচ্ছে। লাইফগার্ড কর্মীরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিপদগ্রস্ত ছয়জনকে আমরা জীবিত উদ্ধার করেছি।