পাহাড়ে বৈসাবিকে ঘিরে জমে উঠেছে উৎসব। চারদিকে এখন আনন্দ-উল্লাসের জোয়ার। মেতেছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সাথে বাঙালীরা। পাহাড়ি তরুণ তরুণীরা সেজেছে নিজেদের ঐতিহ্যরূপে। তাদের পোশাকের বৈচিত্র্যতায় ফুঠে উঠেছে যেন ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ের পরিচয়।
শনিবার শেষ হয়েছে তিনদিন ব্যাপী আয়োজিত বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু-বিষু অর্থাৎ বৈসাবি মেলা। শেষ মুহুতেও ছিল মেলা জমজমাট। মেলায় নামে পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বয়সের অগণিত নারী-পুরুষের ঢল। মেলায় চলে আনন্দের হোলি আর পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-সঙ্গীত, খেলাধূলা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, নাটক ও পণ্য প্রদর্শনী। মেলা যেন পরিণত হয়েছে পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর সম্প্রীতির মিলন ক্ষেত্র।
তবে মেলা শেষ হলেও শেষ হয়নি উৎসব। আবারও শুরু হচ্ছে সাপ্তাহ ব্যাপী বৈসাবির নানা কর্মসূচী। তার মধ্যে আনন্দ শোভাযাত্রা, পাহাড়ি খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ফুল ভাসানো, বিজু, জলখেলি ও বাংলা বর্ষবরণ উৎসব।
এদিকে পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত ১০ভাষাভাষি ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু অর্থাৎ বৈসাবি ঘিরে নামছে পর্যটকের ঢল। দূর-দুরান্ত থেকে আগত পর্যটকদের পদচারণায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে পাহাড়ি জনপদ। পর্যটকদের সরব উপস্থিতি রাঙামাটি যেন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। শহরজুড়ে পর্যটকদের ঠাসা ভিড়।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি শহরের সবকটি আবসিক হোটেল, মোটেল, সরকারি রেস্ট হাউসে লোকজনের ভিড়। কোথাও রুম খালি থাকছে না। লেগে রয়েছে অগ্রিম বুকিংও। পাহাড়ি সম্প্রদায়ের বৈসাবি উৎসব আর রাঙামাটির নৈসর্গিক আবেশ আর দর্শনীয় স্থান ও নিদর্শন গুলো পর্যটকদের আকর্ষণ কাড়ে সহজেই। তাই প্রতিবছর এ উৎসবকে ঘিরে পর্যটকরা রাঙামাটি এসে ভিড় জমায়। বৈসাবি আর পর্যটকদের পদচারণায় যেন উৎসবের জোয়ারে ভাসছে পাহাড়ি কন্যা রাঙামাটি।
এব্যাপারে রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সর ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীদের বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে প্রতিদিন অগণিত পর্যটক রাঙামাটিতে আসতে শুরু করেছে। প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার পর্যটকের আগমন ঘটছে পর্যটন কমপ্লেক্সে। পর্যটন কমপ্লেক্সের সব মোটেল হোটেলগুলো বুকিং রয়েছে। তাছাড়া ১৫এপ্রিলের আগে আর বুকিং নেওয়াও সম্ভব হচ্ছেনা।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৮ এপ্রিল, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-৭