নাটোরে চা না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে চা দোকানী দুই সহোদরকে মরপিট করে গরম পানিতে ঝলসে দিয়েছে এন এস সরকারী কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একদল ছাত্রলীগ কর্মী। এ ঘটনায় চা স্টলের বাসন ও আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে তারা।
বৃহষ্পতিবার দুপুরে নাটোরের নবাব সিরাজ-উদ দৌলা-সরকারী কলেজের সামনে রুস্তমের চা স্টলে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রিয়ন দাবী করেন, চা চাইতে গেলে তিনি উল্টো দোকানীদের হামলার শিকার হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহষ্পতিবার সকালে সিলেটে ছাত্রলীগ কর্মীর উপর হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ। সমাবেশ শেষে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রিওনসহ নেতাকর্মীরা চা পানের জন্য কলেজ গেইট সংলগ্ন আমিরের চায়ের দোকানে যায়। সেখানে চা না পেয়ে তারা ওই দোকানে বসে পাশ্ববর্তী রুস্তমের দোকানে চায়ের অর্ডার দিতে বিপুল নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে পাঠায়। এ সময় দোকানে থাকা রুস্তমের ছোট ভাই ডলার দোকানের বাইরে চা দেবে না জানালে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিওন ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দোকানে আসে ও কয়েকটি চায়ের কাপ ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় আরেক দোকানে বসে থাকা ছাত্রলীগ কর্মীরা রিওয়েন সাথে যোগ দিয়ে ওই দেকানের চেয়ার-টেবিলসহ দোকানের মালামাল ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে দোকানদার ডলারের ভাই মোস্তফা ও রুস্তম তাদের বাধা দিতে এলে চুলায় থাকা গরম পানির কেটলি ছুড়ে মারে ক্ষিপ্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এতে মোস্তফা ও রুস্তমের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়।
চা দোকানী ডলার জানান, ‘চা না দেয়ায় ছাত্রলীগ নেতা রিওন ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানে ঢুকে শাসিয়ে যায় যেন আর চা না বিক্রি করি। বাইরে চা না দেয়ার কথা বললেও সে ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানে ভাঙচুর চালায়। এক পর্যায়ে সে গরম পানি ভর্তি কেটলি ছুঁড়ে মারে।’
চা দোকানী অপর সহোদর গোলাম মোস্তফা জানান,‘আমি রিওনকে বাধা দিতে গেলে আমাদের লক্ষ্য করে সে গরম পানি ভর্তি কেটলি ছুঁড়ে মারে। এত আমার বুকের বেশ কিছু জায়গা ঝলসে চামড়া উঠে যায় ও আমার ভাই রুস্তমের কপাল ঝলসে যায়।’
তবে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা সটকে পড়ে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রিওন চা দোকানী দুই ভাইকে দায়ী করে জানান, কেন চা দেবে না জানতে চাইলে তারা অশালীন ভাষায় গালাগালি করে। এক পর্যায়ে রাগ করে আমি একটা চায়ের কাপ ভেঙ্গে ফেলি। এতে চা দোকানী ডলার ক্ষিপ্ত হয়ে রড দিয়ে আমায় আঘাত করে। এ আনান্য কর্মীরা উপস্থিত হলে ডলার তার ভাইদের ডেকে নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমরা প্রতিরোধ করলে গরম পানি ভর্তি কেটলি আমাদের দিকে ছুঁড়ে মারতে গিয়ে তাদের গায়েই লেগে যায়। রিওন দাবী করেন, ছাত্রলীগের কেউ তাদের গায়ে গরম পানি ছুঁড়ে মারেনি।’
এ ব্যাপারে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিকদার মশিউর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। লিখিত কোন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান ওসি।
এ ঘটনায় বর্তমানে দুই সহোদর রুস্তম ও মোস্তফা নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন