আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরের নড়িয়ায় আওয়ামী লীগের দু'পক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় এক যুবলীগ নেতা নিহত এবং ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের আন্দারমানিক বাজারে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত ইকবাল হোসেন (২৫) রাজনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আমিন ফকিরের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার রাজনগর ইউপি নির্বাচন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাকির গাজী। নির্বাচন নিয়ে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি দাদন মীরবহর ও সাকেব চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মালতের সাথে বিরোধ তৈরি হয়। জাকির গাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমাইল হক ও দাদন মীরবহর স্থানীয় সাংসদ শওকত আলীর সমর্থক।
দুপুরে জাকির গাজীর সমর্থকদের মারধর করে দাদন মীরবহরের সমর্থরা। এ নিয়ে দু'পক্ষ সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে জাকির গাজীর সমর্থকরা দাদন মীরবহরের আন্দারমানিক বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে। বোমা হামলা চালায়। এসময় দু'পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে শতাধিত ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটনো হয়। সেখানে ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষে আরও ২৫ ব্যক্তি আহত হয়।
নিহত ইকবালের বাবা আমিন ফকির বলেন, 'আমরা বংশ পরম্পরায় আওয়ামী লীগ করি। এখন আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে হায়েনারা আমাদের রক্ত পান করছে। অন্যায়ভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে রাজনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির গাজী বলেন, দাদন মীরবহর ও আলিমুজ্জামান মালতের সমর্থকরা আমার তিনজন কর্মীকে কুপিয়ে আহত করেছে। এছাড়া সমর্থকদের বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে। তখন সংঘর্ষ হয়েছে। ইকবাল কাদের হামলায় মারা গেছে তা আমার জানা নেই।
এদিকে, রাজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দাদন মীরবহর বলেন, জাকির গাজী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর মামলা হামলা দিচ্ছে। তার সাথে জামায়াত-বিএনপির লোকজন হাত মিলিয়েছে। তাদের নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এলাকা ছাড়া করার চেষ্টা করছে। তিনি আমার বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালিয়েছে। তাদের ছোড়া গুলিতে আমার এক কর্মী নিহত ও ২৫ কর্মী আহত হয়েছেন।
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম বলেন, নিহত ইকবালের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি রয়েছে। গুলির কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এহসান শাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু'পক্ষের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/১১ আগস্ট ২০১৭/আরাফাত