ফরিদপুরের বাসিন্দা আব্দুস সামাদ শেখ। গত ৫০ বছর ধরে ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন জায়গাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে, সড়কের পাশে নিজের হাতে গাছ রোপণ করেছেন। থাকতেন শহরতলীর ভাজনডাঙ্গা কলনীতে সরকারি জায়গায়। দরিদ্র এই ব্যক্তি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রিকশা চালিয়ে প্রতিদিন যে টাকা উপার্জন করতেন তার থেকে আগে কিনতেন এক বা একাধিক গাছ। এর পর যে টাকা অবশিষ্ট থাকতো তার দিয়ে চাল, তেল, মাছ, লবণসহ পরিবারের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে বাড়ি ফিরতেন।
একারণে এলাকাবাসী তাকে পাগলা সামাদ বলেই ডাকতো। আর ডাকবে না। ফরিদপুর শহরের আনাচে কানাচে আর গাছ হাতে দেখা যাবে না তাকে।কারণ রোগে ভুগে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি। ৬৮ বছর বয়সে শনিবার ভোরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাদা মনের এই মানুষ। ভাজনডাঙ্গি জামে মসজিদে জানাজা শেষে ভাজনডাঙ্গা কবরস্থানে চিরকালের জন্য শুইয়ে দেওয়া হয় সামাদ শেখকে।
গাছ প্রেমিক এই মানুষটি লিভারের টিউমার রোগে ভুগছিলেন। গত ১২ জুলাই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার অস্ত্রপচার করা হয়। পরবর্তীতে সেপটিছেনিয়ায় (রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়া) আক্রান্ত হন।
সামাদকে নিয়ে শীর্ষ দৈনিকগুলো এবং ফরিদপুরের বিভিন্ন আঞ্চলিক পত্রিকায় একাধিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন টেলিভিশনে চ্যানেলে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ইংরেজি দৈনিক তাকে সংবর্ধনাও প্রদান করে।
বিডি প্রতিদিন/১৩ আগস্ট, ২০১৭/ফারজানা