মাদারীপুরের শিবচরে সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠান থেকে বিএনপি ও যুবদলের ১৭ নেতাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের পর দুটি পুরনো মামলায় অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে পুলিশ আদালতে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দেড় বছরের পুরনো মামলায় অজ্ঞাত আসামির স্থলে এসব নেতা-কর্মীদের জড়িয়ে দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আইনগত প্রতিকার দাবি করছেন ভুক্তভোগীদের পরিবার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শিবচরে বিএনপি’র সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি চলাকালে উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের ২০ নেতাকর্মীকে আটক করে শিবচর থানা পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে ওইদিন গণমাধ্যম কর্মীদের জানানো হয়। তবে এদের মধ্যে তিনজনকে ৩৪ ধারায় এবং বাকিদের মধ্যে ৭ জনকে ২০১৬ সালে শিবচরের সোনারবাংলা হোটেলের সামনে সিগারেট কেনা-বেচা নিয়ে বজলু মাদবর নামের এক ব্যক্তির দায়ের করা সংঘর্ষের মামলায় এবং ১০ জনকে পাঁচ্চর এলাকায় সালিস নিয়ে সংঘর্ষের মামলায় অজ্ঞাত আসামি করে গত ৬ আগস্ট আদালতে পাঠান পুলিশের এসআই ইব্রাহিম পাটোয়ারী।
৩৪ ধারায় আদালতে পাঠানো তিনজনকে ওই দিনই জামিন দেয় আদালত। বাকিদের ১০ আগস্ট জামিন মঞ্জুর হয়। কিন্তু জেল-হাজতে থাকা অবস্থাতেই তাদের বিরুদ্ধে শ্যোনঅ্যারেস্ট দেখানো হয়। সিগারেট কেনা নিয়ে সংঘর্ষের মামলায় যে ৭ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল তাদেরকে সালিশ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় এবং সালিশ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় যে ১০ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল তাদেরকে সিগারেট কেনা নিয়ে সংঘর্ষের মামলায় শ্যোনঅ্যারেস্ট দেখায় শিবচর থানা পুলিশ। এই কারণে তারা এখনও কারাগারে আটক রয়েছেন। বিষয়টিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলছেন বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের স্বজনরা।
শিবচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জসিম মৃধার ভাই শাহাদাৎ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, একটি শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠান থেকে অন্যদের সাথে আমার ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুরনো ২টি মামলার অজ্ঞাত আসামির স্থলে আদালতে পাঠানো হয়। এরপর আবার ঘুরিয়ে অন্য একটি মামলায় শ্যোনঅ্যারেস্ট দেখায়। অথচ একটি মামলাতেও সে আসামিস নয়। আমরা এই ঘটনার উপযুক্ত আইনগত প্রতিকার দাবি করছি।
আটককৃত নেতা-কর্মীদের পক্ষের আইনজীবী জামিনুর হোসেন মিঠু বলেন, ‘দুটি মামলায় বিএনপি ও যুবদলের ১৭ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে কারাগারে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে আদালত জামিন দিলেও আবার একই মামলায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অন্যায়ভাবে শ্যোনঅ্যারেস্ট দেখায় পুলিশ। মামলার অজ্ঞাত আসামির স্থলে গ্রেফতার দেখিয়ে এসব নিরাপরাধ ব্যক্তিকে কারাগারে আটকে রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে আদালতে আবেদন করা হলে ১৬ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করে আদালত।
মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আনোয়ার হোসেন ভূইয়া বলেন, আদালতে পাঠানো ১৭ জনের বিরুদ্ধে পুরনো মামলা ছিলো। তবে তাদের সবার ব্যক্তি নামে মামলা ছিল না, ঘটনায় জড়িত অজ্ঞাত আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয় বলেও তিনি দাবি করেন।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ আগস্ট, ২০১৭/মাহবুব