বগুড়ার শেরপুরে আউশধান কাটা মাড়ায় শেষের দিকে। আউশ কাটার পর এখন রোপা আমন চাষ শুরু করেছে চাষিরা। আপদকালিন হিসেবে পরিচিত আউশ আবাদকারিরা ভাল ফলন পেয়েছে। শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ধান কাটছে চাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পুরো দান কাটা শেষ হবে। ঈদের আগে চাষিরা ধান বিক্রি করে সংসারে বাড়তি যোগান দিতে পারবে।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গ্রামে গ্রামে চলছে জিরাশাইল ও পারিজাত (রোপা আউশ) ধান কাটার ধুম। ধান কাটার পর উচুঁ স্থানে রোদে শুকিয়ে বিক্রি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে চাষিরা। শেরপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নজুড়ে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান কাটতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এবার ফলনের দিক থেকে রেকর্ড গড়েছে। বিঘা প্রতি দেশীয় জাত ১৩ থেকে ১৫ মণ এবং হাইব্রিড ১৭ থেকে ১৯মণ হারে ফলন হয়েছে বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন। আর দামও তুলনামূলক ভাল পাচ্ছেন বলে তারা জানান। আউশ কাটার সাথে সাথে রোপা আমন লাগানো চলছে। অনেক এলাকার কৃষকরা ইতোমধ্যেই জমিতে রোপা আমন ধান চাষও শেষ করেছেন। অপরদিকে রোপা আউস মৌসুমের ধান কাটা-মাড়াই শেষ হতে আরও ৫/৬ দিন সময় লাগবে। আর এ মাসের শেষ নাগাদ জিরাশাইল ও পারিজাত ধান কাটা এবং চলতি রোপা আমন মৌসুমের ধান লাগানোর কাজও সমাপ্ত হবে -এমনটাই জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বরেন্দ্রখ্যাত উপজেলার বিশালপুর, কুসুম্বী, মির্জাপুর, গাড়িদহ, ভবানীপুর, শাহবন্দেগী ইউনিয়নের বাড়ি বাড়ি কৃষকরা তাদের উৎপাদিত রোপা আউশ মৌসুমের জিরাশাইল ও পারিজাত ধান ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। প্রায় দেড় যুগের অধিককাল ধরে এখানকার কৃষকরা কম-বেশি এ ধান চাষ করে আসছেন। চলতি বছরও এ উপজেলায় কৃষকরা প্রায় ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে জিরাশাইল ও পারিজাত ধান লাগিয়েছেন। স্থানীয় কৃষকদের ভাষায়, এটি তাদের সারা বছরে উৎপাদিত ফসলের মধ্যে বাড়তি ফসল। যা থেকে বাড়তি আয় আসে। আর অসময়ে এ বাড়তি আয় তাদের সংসারের অভাব অনেকটাই ঘুচিয়ে দেয় বলে তারা মনে করেন।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সাধুবাড়ী গ্রামের মোজাম্মেল হক, শহিদুল ইসলাম ও মামুরশাহী গ্রামের সোহেল রানাসহ একাধিক কৃষক জানান, বোরো ধান ঘরে তোলার পর আমন চাষের আগে বেশিরভাগ জমি প্রায় ৩ মাস পরে থাকে। এই সময়টাতে স্থানীয় কিছু চাষিরা আউশজাতের ধান আবাদ করে ফলন ঘরে তোলার পর আবার রোপা আমন ধান চাষ করে। এতে জমি পরে না থেকে বাড়তি ফলন ঘরে তোলে। স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে গেল এক সপ্তাহ ধরে এই ধান উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতিমণ কাঁচা ধান ৭৫০ থেকে ৮৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান জানান, এবার রোপা আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাছাড়া বাজারে ধানের দামও মোটামোটি ভালো থাকায় কৃষক বেশ লাভবান হয়েছেন। স্থানীয় কৃষকরা জমি ফেলে না রেখে চাষকরে ঘরে ফলন তোলে। এটাকে তারা আপদকালিন বা বাড়তি ফলন বলে থাকে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার