সিরাজগঞ্জে ভাতা বঞ্চিত পাঁচ বীরমাতার হাতে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বই তুলে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা। সোমবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে পাঁচ বীরমাতার হাতে এ ভাতা বই তুলে দেয়া হয়।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ ইরতিজা আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব-উপসচিব) মোহাম্মদ শামীম আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ কামরুল হাসান ও জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এখন থেকে এ সকল বীরমাতারা প্রতি মাসেই দশ হাজার টাকা করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাবেন। এ ছাড়াও বিগত ১২ মাসে না পাওয়া ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে একককালীন পাবেন। ভাতা পেয়ে বীরমাতারা সরকার ও জেলা প্রশাসক কামরুন নাহারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
বীরমাতা রাহিলা খাতুন, হাজেরা ও করিমন বেগম জানান, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু আমাদের মা বলে সম্বোধন করেছিল। আমাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে দিয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর থেকে আমরা রাস্তার ধারে, রেলষ্টেশনের পাশে মানবেতরভাবে দিনযাপন করেছি। দীর্ঘদিন পর উত্তরণ মহিলা সংস্থার পরিচালক সাফিনা লোহানী আমাদেরকে আবারো সমাজ-জাতির সামনে নিয়ে আসেন।
এ অবস্থায় তাদের করুণ জীবন কাহিনী প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন জটিলতার কারণে ভাতা পাওয়া হয়নি। এ নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ ২৪ টিভিসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও ইলেক্টনিক্স মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকার নজরে আসার পর তিনি মন্ত্রণালয় বরাবর জোর তদবির শুরু করেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা জানান, যারা দেশের জন্য সম্ভ্রম হারিয়েছে, তাদের অবস্থা করুণ দেখে হৃদয় মর্মাহত হয়। তাদের জন্য সামান্য কিছু করলেও নিজেকে ধন্য মনে হবে। এ জন্য গত ঈদে তাদেরকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল। আর তারা যেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দ্রুত পায় সে জন্য ডিসি সম্মেলনে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল। বিষয়টি মন্ত্রণালয় গুরুত্ব সহকারে নেয়ায় মাত্র দু'মাসের মধ্যেই বীরমাতাদের ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/২৮ আগস্ট ২০১৭/হিমেল