হাইকোর্টের জাল সার্টিফাইড কপি জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে সরবরাহের ঘটনায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার বিচারপতি ইনায়েতুর রহিমের কোর্টে এ আদেশ দেওয়া হয়।নোয়াখালী জেলা পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচন স্থগিত করতে এ জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে প্রার্থী ইমরুল চৌধুরীর আইনজীবী আজাহার উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, যেহেতু এ বিষয়ে আদালতের কোনও আদেশ নেই, তাই কোর্টের নামে জাল সার্টিফাইড ব্যবহার করে তারা অপরাধ করেছে। সেজন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মহোদয়কে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আহমাদুল কবির গত ৭ সেপ্টেম্বর মাননীয় বিচারপতি মুহাম্মদ রেজাউল হক এবং মুহাম্মদ উল্ল্যাহর ১৬ নম্বর কোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। যার নম্বর ১২৮৪৬/২০১৭। যার আইনজীবী ছিলেন জনাব জাফর ইমাম।
ওই মামলায় বিজ্ঞ আদালতে আহমাদুল কবিরের পক্ষে অংশ নেন সিনিয়র আইনজীবী ইউসূফ হোসেন হুমায়ূন। মামলায় বিজ্ঞ আদালত এই মর্মে মতামত প্রদান করেন যে যেহেতু আগামী ১০ তারিখ নির্বাচন তাই ৭ তারিখে আদালত কোনও অর্ডার পাশ করবেন না। তখন ওই মামলার আইনজীবী নট প্রেস করেন।
ধারণা করা হচ্ছে, আদালতে নিজের প্রত্যাশা মত আদেশ পেতে ব্যর্থ হয়ে, প্রার্থী আহমাদুল কবির বিজ্ঞ বিচারক ইনায়েতুর রহিম এবং বিজ্ঞ বিচারক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন মহোদয়ের আদালতের তালিকাভূক্ত থাকা রিট পিটিশন নাম্বার ১২৮৪৬/২০১৭ ও ২৯-৮-২০১৭ তারিখে জনৈক আবু নাসেরের ১৯ নম্বর রিট পিটিশনের নাম ব্যবহার করে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে হাইকোর্টের জাল সার্টিফাইড কপি সরবরাহ করেন।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) স্থগিত নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাল সার্টিফাইড কপিতে দুই প্রার্থীর মধ্যে একজন একেএম ইমরুল চৌধুরীর প্রার্থীতা বাতিলের কথা উল্লেখ থাকায় রিটার্নিং অফিসার নির্বাচন স্থগিত করেন।
এরপরই কারণ অনুসন্ধানে নেমে প্রার্থী ইমরুল চৌধুরী জানতে পারেন যে, ওই সার্টিফাইড কপিটি জাল। প্রতিপক্ষ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য এই অসাধু কৌশল অবলম্বন করেছেন বলে মনে করছেন তিনি।
এর আগে প্রার্থী ইমরুল চৌধুরীর আইনজীবী আজাহার উল্লাহ ভূঁইয়া জানান, আবু নামের নামের এক ব্যক্তি হাইকোর্টে ওই রিটটি দায়ের করেন। পরে ২৯ আগস্ট আদেশের জন্য ওই রিট আবেদনটি বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিমের কার্যতালিকাভুক্ত হয়। তবে বাদীর আবেদনে সন্তুষ্ট না হয়ে বিচারক রিটটি সেই দিনের কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। অথচ আদেশ দেওয়া হয়েছে এমন একটি জাল সার্টিফাইড কপি তৈরি করে তা জেলা রিটার্নি অফিসারের কাছে জমা দেওয়া হয়। সেখানে ওই নির্বাচনের দুইজন প্রার্থীর মধ্যে একেএম ইমরুল চৌধুরীকে বাদ দেওয়া ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের আদেশ ৪ মাসের জন্য স্থগিতাদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।
বিডিপ্রতিদিন/ ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭/ ইমরান জাহান