আশি ঊর্ধ্ব রোহিঙ্গা বৃদ্ধা রশিদা বেগম মায়নামারের বুচিডং রাজ্যের ঘোনার পাড়ায় ৬ ছেলে মেয়ের একন্নবর্তী পরিবার নিয়ে মোটমুটি সুখেই দিনাদিপাত করছিল। ১৯৭৮ এর ক্রেকডাউনে মায়ানমার রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে প্রাণ হারায় তার স্বামী। সে সময় তাদের অনেক প্রতিবেশী সব কিছু ফেলে বাংলাদেশ আসলেও রশিদা বেগম ৬ এতিম ছেলে-মেয়ে নিয়ে সুখ খোঁজে স্বামীর স্মৃতি বিজড়িত বসত ভিটায়।
কিন্তু ২০১৭ সালে সেখানে তার আর থাকা হল না। প্রাণ বাঁচাতে শিশু নাতির পিঠে তিনদিন চড়ে বৃদ্ধা রশিদা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর সকালে আশ্রয় নিয়েছে উখিয়ার বালুখালি রোহিঙ্গা ঝুঁপড়িতে। তাকে পিঠে করে নিয়ে আসা ১২ বছরের শিশু নাতি মোহাম্মদ জুহার জানান, ৫ দিন আগে মায়ানমার মিলিটারি তাদের ঘরে আগুন দেয়। দাদির সামনেই গুলি করে হত্যা করে দুই পুত্রকে। ধর্ষণ করে পুত্রবধূদের। সে সময় নাতি জুহারকে বাঁচাতে বৃদ্ধা রশিদা কোনক্রমে বাড়ির পেছন দিয়ে সটকে পড়ে। পরে শিশু নাতি জুহার টানা তিন দিন দুর্গমপথ পাড়ি দিয়ে কাঁধে-পিঠে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসে বৃদ্ধা দাদিকে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রোহিঙ্গা বৃদ্ধা রশিদা বেগম বলেন, ৭৮ সালে স্বামী খুনের পরও ভাবিনি জন্মস্থান আরাকান ছাড়তে হবে। শেষ পর্যন্ত পারলাম না। সবকিছু হারিয়ে চড়া মূল্য দিয়ে এখন বেঁচে থাকাটা জীবনের অর্থ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭/মাহবুব