শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা লঞ্চঘাটে ডুবে যাওয়া লঞ্চ ৩টি উদ্ধারের জন্য দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান শুরু করেছে বিআইডব্লিউিটিএ। নিখোঁজ যাত্রীদের খুজে পাওয়ার জন্য কাজ শুরু করেছে নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও নৌপুলিশ। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। পদ্মা নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকার কারণে উদ্ধার তৎপরতা বিঘ্নিত হচ্ছে। বৈরি আবহাওয়া ও স্রোতের কারণে সোমবার উদ্ধার অভিযান চালাতে পারেনি।
এদিকে, সুরেশ্বর এলাকার পদ্মা নদী থেকে সজল পাল (২৫) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। লাশটি সুরেশ্বর মাছ ঘাটে রাখা হয়েছে। পকেটে থাকা মুঠোফোনের নম্বর দেখে ওই যুবকের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে নৌপুলিশ। ওই যুবক খুলনার রুপসা থানার পিটাভোগ পালপাড়া এলাকার শ্রীকান্ত পালের ছেলে।
নৌ পুলিশের সুরেশ্বর ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক জয়নাল আবেদিন বলেন, সকাল ৯টার দিকে নড়িয়ার সুরেশ্বর এলাকার পদ্মা নদীতে একটি লাশ ভাসতে দেখে ফাঁড়িতে খবর দেয় স্থানীয় জেলেরা। লাশটি উদ্ধার করে তীরে এনে তার পকেটে থাকা মুঠোফেনের নম্বর দেখে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। প্রাথমিকভাবে তারা জানান লাশটি সজল পাল নামের এক যুবকের।
সজল পালের ভগ্নিপতি খুলনার সোনডাঙা মডেল থানার উপপরিদর্শক দীপক পাল মুঠোফোনে জানান, বাড়িতে কাউকে কিছু না বলে সজল গত ৮ তারিখে বাড়ি থেকে বের হয়েছে। তার মুঠোফোনের অস্তিত্ব মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের একটি টাওয়ারে পাওয়া যায়। ৯ তারিখে লৌহজং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। নড়িয়া থানার পুলিশের পাঠানো ছবি দেখে তার চেহারা বোঝা যাচ্ছে না। পোশাক ও সাথে থাকা ফোনের সিম কার্ড দেখে আমাদের ধারণা ওই মরদেহ সজলের হবে।
এর আগে, সোমাবর পদ্মা নদী ভাঙনের কারণে নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা লঞ্চঘাটের পল্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পানির স্রোতে পল্টুনে নোঙর করা তিনটি লঞ্চ ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া মৌচাক লঞ্চটি ওই ঘাট হতে ঢাকায়, নড়িয়া ২ ও মহানগরি লঞ্চটি নারায়নগঞ্জে চলাচল করত। লঞ্চে থাকা তিন যাত্রী ও ১৩ জন কর্মী এখনও নিখোঁজ রয়েছে। তবে মঙ্গরবার সকালে উদ্ধার হওয়া সজল পালের নাম নিখোঁজের তালিকায় ছিল না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরিন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ‘র (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক (উদ্ধার) ফজলুর রহমান বলেন, লঞ্চ তিনটি ও নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধার করার জন্য উদ্ধারযান প্রত্যয় সোমবার বিকালে ভেদরগঞ্জ উপজেলার দুলারচর এলাকায় অবস্থান করছে। তবে ওই দিন স্রোতের কারণে অভিযান চালাতে পারেনি। মঙ্গলবার সকালে নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএ‘র ডুবুরিরা উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। একটি লঞ্চ দুলারচর এলাকায় শানাক্ত করা গেছে। কিন্তু স্রোতের কারণে ডুবরিরা ওই লঞ্চের সাথে কোন দড়ি বাঁধতে পারছে না।
বিডি-প্রতিদিন/১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭/মাহবুব