মাদক বিরোধী অভিযানের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ঘাটাইল থানা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও কমিটির অন্যান্য সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কমিটির সভাপতি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আবু কাসেম মো. শাহিনের উপস্থিতিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক শহীদুল ইসলাম লেবু, ধলাপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হেকমত শিকদার, ঘাটাইল পৌর মেয়র মো. শহিদুজ্জামান ও জিবিজি কলেজের অধ্যক্ষ সামছুল আলম মনি কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরে ঘাটাইল থানা পুলিশের অসাধু কর্মকর্তাদের তীব্র সমালোচনা করেন।
জানা যায়, প্রায় ৩ মাস আগে ঘাটাইল থানায় যোগদান করেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন। তিনি যোগদান করে মাদক বিরোধী অভিযানে নামেন। কিছু দিন যেতে না যেতেই তার এই অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হয়। অভিযোগ আছে, মাদক বিরোধী অভিযানকে পুজি করে পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজিতে জরিয়ে পরেছে। আর এতে হয়রানির স্বীকার হচ্ছে নিরিহ মানুষ।
আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় একটি ঘটনা তুলে ধরে কমিটির সদস্য শহিদুল ইসলাম লেবু জানান, গত ৬ সেপ্টেম্বর মো: সাব্বির হোসেন সাঈদ (২৮) স্থানীয় খেলার মাঠে ক্রিকেট খেলে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে ঘাটাইল থানার এএসআই মতিউর রহমান তার সহযোগী কনস্টেবল নিয়ে সাঈদকে আটক করে। আটকের পর তার কাছে কোনো মাদক দ্রব্য না পেয়েও তাকে মাদক ব্যবসায়ী অভিযোগে থানায় নিয়ে আসে। পরে ওই এএসআই সাব্বিরকে তার বাবাকে ফোন করে থানায় টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে বলে। পরে সাব্বিরের ফোন পেয়ে তার বাবা থানায় আসলে থানায় এএসআই মতিউর তার কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা দাবি করে। এছাড়া দাবিকৃত টাকা না দিলে ছেলেকে ফেন্সিডিল-ইয়াবা সামনে দিয়ে পত্রিকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে প্রকাশ করবেন বলে হুমকি দেয়।
এ ব্যাপারে সাব্বিরের বাবা মো: খোরশেদ আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমার ছেলের ফোন পেয়ে আমি থানায় ছুটে যাই। পরবর্তীতে এএসআই মতিউর ১ লক্ষ টাকা দিয়ে আমার ছেলেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা বলেন। পরে সম্মানের কথা বিবেচনা করে আমি পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে রাজি হই। কিন্তু এএসআই মতিউর 'ওসি রাজী হবে না' ওজুহাত দেখিয়ে টাকা বাড়িয়ে দিতে বলে। পরে আমি আরো দশ হাজার টাকা বাড়িয়ে দিতে চাইলে সে আমার ছেলেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে ষাট হাজার টাকা দেওয়ার পরও মতিউর রহমান আমার ছেলেকে বাড়িতে না পাঠিয়ে ১৩৪ ধারায় মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এদিকে অভিযোগের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে এএসআই মতিউর রহমান এই প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন এবং সংবাদটি না করার অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে আমার কোনো কিছু জানা নেই। লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭/হিমেল