বাগেরহাটে ঐতিহাসিক হযরত খানজাহান (রহ.) মাজার শরীফ প্রঙ্গণে শুক্রবার বিকাল থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক মেলা। প্রতিবছর চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই মেলা শুরু হয়। চলে তিনদিন ধরে। আগামী রবিবার এই মেলা শেষ হবে। সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটকসহ ভক্ত-আশেকান নারী পুরুষ মাজার এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে। পুলিশ এবার মেলায় নিরাপত্তায় বসিয়েছে সিসি ক্যামেরা। এছাড়া মেলায় বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োজিত থাকছে।
প্রতি বছর প্রায় এক লাখ ভক্ত ও আশেকানসহ দেশি-বিদেশি পর্যটক হযরত খানজাহানের মেলায় জড়ো হন তাদের মনোবাসনা পূরণের আশায়। তাদের বিশ্বাস মেলার সময়ে হযরত খানজাহানের মাজার শরীফ মিলবে তাদের সকল সমস্যার সমাধান। অন্যদিকে মেলা উপলক্ষে মাজার এলাকায় দোকানীরা নানা রকমের পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
প্রায় সাড়ে ছয়শ' বছর ধরে হযরত খানজাহান (রহ.) মাজারে এই মেলা চলে আসছে। মেলায় এসে হযরত খানজাহানের ভক্ত আশেকান দূর দূরান্ত থেকে মাজার এলাকার দীঘিরপাড়সহ বিস্তৃর্ণ স্থান জুড়ে যে যার মত করে তাদের আসর বসিয়েছেন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ভক্ত-আশেকানদের পদচারণায় মাজার প্রাঙ্গণ যেন এক মিলন মেলায় পরিণত হয়ে উঠেছে।
ভক্ত-আশেকানরা দেশীয় নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে খাজাবাবা খানজাহানের খানসহ মুর্শিদী- মারফতি, লালন, ও ভাটিয়ালী গান পরিবেশন করে থাকেন।
হযরত খানজাহানের ভক্ত-আশেকানরা বলেন, প্রতি বছর পূর্ণিমা তিথিতে আমরা এখানে জড়ো হই। এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হযরত খানজাহানের আশেকানরা দেশীয় বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গানের আসর বসান। হযরত খানজাহানের কৃপার আশায় মেলা শেষে আবার সবাই যার যার গন্তব্যে ফিরে যাই।
মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির বলেন, প্রতিবছর চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই মেলা বসে। খানজাহানের হাজার হাজার ভক্ত-আশেকানরা তাদের নানা মনো বাসনা নিয়ে হাজির হন। তারা বিশ্বাস করেন খানজাহান এখানে কাউকে খালি হাতে ফিরান না। তাদের সব আশা পূরণ করেন খানজাহান। তাই সব ধর্মের মানুষ এই সময়ে হযরত খানজাহানের মাজারে মিলিত হন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এবার মেলায় সব ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীকে সেখানে নিয়োগ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/৩০ মার্চ ২০১৮/হিমেল