পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাস্বর ইউনিয়নের চরচাপলী হাফেজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার আড়ালে শিশুদের মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই মাদ্রসার শিক্ষকরা কোমলমতি শিশু কিশোরদের শাসনের নামে রশি দিয়ে হাত-পা বেধে মারধর করে এমন অভিযোগ করেন চরচাপলী হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইসমাইল (১৩) ও তার দিনমজুর বাবা আলমগীর। আহত শিশু ইসমাইল ও হাসানকে কুয়াকাটা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
শিশু ইসমাইল জানান, ২৫ মার্চ দুপুরে কোন কারণ ছাড়াই তাকে এবং একই এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে হাসানকে (১২) প্রথমে মাদ্রাসা ভবনের বাইরে মাদ্রাসার শিক্ষক আসাদুজ্জামান লাঠি দিয়ে মারধর করে। এতেই থামেননি তিনি। এরপর মাদ্রসার অপর শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঘরের মধ্যে আড়ার সাথে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধরক লাঠিপেটা করা হয়। দুই শিশুর আকুতি মিনতি পাষন্ড ওই শিক্ষকের মন গলাতে পারেনি।
শিশু ইসমাইল আরো জানান, ২২ মার্চ তাকে প্রথম দফায় বেধরক মারধর করা হয়। তখন এই মারধরের কথা ভয়ে কাউকে জানায়নি। নির্যাতিত শিশু ইসমাইলের বর্ণনা অনুযায়ী ওই মাদ্রাসায় প্রায় অবাধ্য শিশুদের এরকম নির্যাতন করা হয়।
এ ব্যাপারে ওই মাদ্রসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাসুম বিল্লাহ জানান, এ ঘটনার সময় তিনি মাদ্রাসায় ছিলেন না। তবে তাকে ইসমাইলের বাবা জানিয়েছেন। ইসমাইলকে নিয়ে মাদ্রসার যাওয়ার জন্য বলে দিয়েছেন। এ মারধরের ঘটনাকে স্বাভাবিক শাসন উল্লেখ করে মাসুম বিল্লাহ বলেন, দুষ্টুমী করলে শাসন করা হয়।
এমন নির্যাতনের বিষয়ে শরীফপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. ওয়ালিউল্লাহ হানিফ বলেন, মাদ্রসায় কোরআন শিক্ষার আড়ালে শিশুদের এমন বর্বর নির্যাতন আদিম যুগকে হার মানিয়েছে। তিনি আরো বলেন, হাফেজি মাদ্রসাগুলোতে শিক্ষা অধিদপ্তরের তদারকি না থাকায় এমন নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটছে।
বিডি প্রতিদিন/৩০ মার্চ ২০১৮/হিমেল