ময়মনসিংহের ভালুকায় গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থী হাফিজুর ইসলামের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার বান্দাইপুর গ্রামে। নিহত হাফিজুর ইসলাম ওই গ্রামের বেলাল হোসেনের দ্বিতীয় ছেলে। ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর সংবাদে এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
স্থানীয়রা জানান, নিহত হাফিজুরের বাবা বেলাল হোসেন একজন দিনমজুর। বড় ছেলে রবিউল ইসলাম বিয়ে করে পৃথকভাবে বসবাস করেন। দ্বিতীয় ছেলে হাফিজুর ইসলাম খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতেন। একমাত্র মেয়ে মাসুমা খাতুন প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
নিহতের চাচাতো ভাই এনামুল হক জানান, নিহত হাফিজুর ইসলাম পরানপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে এসএসসি ও ২০১৩ সালে মান্দা মমিন শাহানা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর ভর্তি হন খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে লেখাপড়া শেষ করে ভালুকার একটি টেক্সটাইল মিলে ইন্টার্ন করছিলেন। মেধাবি হওয়ায় অনেক কষ্টে লেখাপড়া করিয়ে আসছিলেন দিনমজুর বাবা। হাফিজুরের অকাল মৃত্যুতে পরিবারের লোকজনসহ এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মেধাবী ছেলেকে হারিয়ে মা পারুল আক্তার এখন বাকরুদ্ধ।
জানা গেছে, খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে সদ্য মাস্টার্স শেষ করে চারজন শিক্ষার্থী ময়মনসিংহের ভালুকার মাষ্টারবাড়ি এলাকার একটি টেক্সটাইল মিলে ইন্টার্ন করছিলেন। মাস্টারবাড়ি এলাকার ৬ তলা ভবনের ৩ তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতের তারা। গত শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রান্না ঘরের গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ওই ভবনের ৩ তলার কক্ষটি বিধ্বস্ত হয়। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই নিহত হন বগুড়ার তৌহিদুল ইসলাম। দুর্ঘটনায় দগ্ধ হন সিরাজগঞ্জের শাহীন, নওগাঁর হাফিজুর ও মাগুরার দীপ্ত সরকার।
মান্দা থানার ওসি আনিছুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমারও শুনেছি হাফিজুর রহমান ছয় দিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু সাথে যুদ্ধ করে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার গ্রামের বাড়িতে এখনো লাশ এসে পৌঁছায়নি বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/৩০ মার্চ ২০১৮/হিমেল