নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে তারই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রকে মারধর করে আহত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মো: মোস্তাকিম নামের আহত শিক্ষার্থী গত ১৩ দিন যাবৎ মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
এ ঘটনার বিচার চেয়ে আহত স্কুলছাত্র মোস্তাকিমের বাবা রফিকুল আলম ওরফে মানিক বাদি হয়ে একেএম আশরাফুজ্জামান ওরফে শাহানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, মোস্তাকিম মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র। গত ১৫ এপ্রিল প্রথম সাময়িক ইংরেজি পরীক্ষা চলছিল। এসময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মোস্তাকিম পরীক্ষার হলে এদিক ওদিক তাকাচ্ছিল অভিযোগ এনে তাকে মারাত্মকভাবে মারপিট করে। খবর পেয়ে ওই ছাত্রটির মা-বাবা বিদ্যালয়ে গিয়ে মোস্তাকিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
শিশুটির মা আমেনা খাতুন কান্না জড়িত কণ্ঠে স্থানীয় সাংবাদিকদেরকে বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে তিনি আমার ছেলেকে শাসন করবেন এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তিনি কিভাবে আমার এই মাসুম বাচ্চাটিকে লাথি মেরে দুই তালার সিঁড়ি থেকে ফেলে দিলেন এটি আমি একজন মা হিসেবে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা। তিনি আরো বলেন, ১২ দিন ধরে আমি আমার অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে রয়েছি। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো শিক্ষকই আমার ছেলেকে দেখতে পর্যন্ত আসেননি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক এটিএম আশরাফুজ্জামান শাহান ওই ছাত্রটিকে লাথি মেরে দ্বি-তলা সিঁড়ি থেকে ফেলে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, পরীক্ষায় নকল করার দায়ে আমি তাকে শাসন করি এবং তার খাতাটি নিয়ে আসি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, গত মঙ্গলবার উপজেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত করে গেছেন। আমাদের কাছে সরকারী নির্দেশনা আছে কোন শিশুকে মানষিক বা শারীরিক নির্যাতন করা যাবে না। তবে বিষয়টি কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিনয় চন্দ্র শর্মা এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি সোমবার বিকেলেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই স্কুলছাত্রটিকে দেখে এসেছি এবং তার মা বাবার সাথেও কথা বলেছি। তবে এ বিষয়টি আমি নিজেই তদন্ত করব এবং সত্যতা পাওয়া গেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী মাহমুদ আকন্দ বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলাম। বুধবার আমার কাছে রিপোর্ট দেয়ার কথা রয়েছে। আমাকে রিপোর্ট দিলে সেই অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন