নোয়াখালী সদর উপজেলার পূর্ব এওজবালিয়া গ্রামে বেদে পল্লীতে এক কিশোরের মৃত্যুর গুজবে বেদে পল্লীতে স্থানীয়দের হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় দুই পক্ষের ২টি মামলা হয়েছে। আহত কিশোর তারেক আজিজের পিতা দেলোয়ার হোসেন বাহার বাদী হয়ে গ্রামবাসীর পক্ষে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় ১৩ জন বেদের নাম উল্লেখসহ কয়েকজন বেদেকে আসামি করা হয়েছে।
অপরদিকে বেদেদের পক্ষ থেকে ২৫ গ্রামবাসীর নাম উল্লেখসহ ২ শতাধিক অজ্ঞাত লোকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বেদেরা। পুলিশ পাঁচ গ্রামবাসীকে আটক করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। তবে এখনও বেদেদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক বেদে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
এ দিকে এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় এমপি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ আর্থ সহায়তা দেন এবং সার্বিক সহায়তা করার আশ্বাস দেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত শুক্রবার বেদে পল্লীর এক কিশোরী স্থানীয় একটি দোকানে আইসক্রিম কিনতে গেলে দোকানী তাকে অশালীন মন্তব্য করে। এনিয়ে বেদেদের সাথে দোকানী ও স্থানীয় লোকজনের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় তারেক আজিজ (১৭) নামে এক কিশোর দোকানের গরম তেলের কড়াইয়ে পড়ে ঝলসে যায়। সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সোমবার দুপুরের দিকে এলাকায় তারেকের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে তার স্বজন ও এলাকাবাসী বেদে পল্লীতে হামলা চালায়। দুপুর দুইটা পর্যন্ত চলে এই তাণ্ডব।
বেদে সর্দার মো: ওয়াসিম অভিযোগ করেন, গত ছয় বছর থেকে শতাধিক বেদে পরিবার পূর্ব এওজবালিয়া গ্রামে নিজস্ব ভূমিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে। বখাটেরা প্রায়ই তাদের কিশোরীদেরকে উত্যক্ত করে আসছে। সোমবারের ঘটনায় তাদের ৩২টি টিনের ঘর, ১০টি তাবু ও ২৫টি খুপরি ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এছাড়া ১১টি ঘর ও ১১০টি সাপ পুড়ে যায়। হামলায় আহত হয়েছে ৬ বেদে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন দু'পক্ষের দুটি মামলার কথা স্বীকার করেন বলেন, ৫ জনকে আটক করা হয়েছে এবং এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে। অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন