মাদারীপুরে ধর্ষণ শেষে দুই স্কুলছাত্রীতে বিষ খাইয়ে হত্যার মামলা করায় আসামিদের ভয়ে ঘর-বাড়ি ছেড়ে দুই বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বাদীর পরিবার। মামলার হাজিরার দিন আদালতে হাজিরা দিতে আসেন পুলিশ পাহারায়। আজ সোমবার দুপুরে মাদারীপুর এমএম হাফিজ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরিতে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন নিহত স্কুলছাত্রীর বাবা ও মামলার বাদী বিল্লাল শিকদার।
অভিযোগ, ২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট মস্তফাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার ও হ্যাপী আক্তারকে ধর্ষণ শেষে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়। এমন নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় সদর হাসপাতাল থেকে শুধুমাত্র আত্মহত্যা করেছে বলে ময়নাতন্তের রিপোর্ট দেয়। এই হত্যার ঘটনায় মামলা হলে পুলিশের পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য তাদের না জানিয়ে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি ৮জনের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র আত্মহত্যার প্ররাচনায় অভিযোগ এনে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি পুলিশ। এ সময় মামলার ৫ম তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসরাফ হোসেন আসামি শিপন শিকদার, সালমা বেগম ও রফিকুল ইসলাম সজিবকে অব্যাহতি দিয়ে মেহেদী, আল-আমিন, নাজমুল, উজ্জ্বল, রকিবসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বিল্লাল শিকদার সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করেন, গ্রেফতারকৃত আসামিরা সবাই জামিনে বেড়িয়ে এসে তাদের পরিবারের সহযোগিতায় প্রতিনিয়ত জীবন নাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এজন্য গত দুই বছর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিল্লাল শিকদারের পরিবার। এছাড়া পুলিশের সহযোগিতায় উজ্জল, নাজমুল, সজিব, আল-আমিন ইতিমধ্যে দেশের বাইরে চলে গেছে।
মামলার প্রধান আসামি রানা নাগার্সী, শিপন শিকদার, রফিবুল দর্জি, রকিব শিকদার, সজিব হাওলাদার, রানা মা সালমা বেগম গ্রেফতার হয়। বাকি ২নং আসামী উজ্জল, মেহেদী, নাজমুল ও আলআমিন এখনো পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের আজও খুঁজে বের করতে পারিনি। আমি গত তারিখে পুলিশ পাহারায় আদালতে হাজিরা দিয়ে আসি। মঙ্গলবার মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ আমি সেখানেও পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে আদালতে যাবো। ঢাকা থেকে পালিয়ে এসে সংবাদ সম্মেলনে এসেছি। আপনাদের মাধ্যমে আমি যাতে আমার মেয়ের হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার পেতে পারি ও আমার বসত বাড়িতে থাকতে পারি তার আবেদন করছি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বদলুর আলম মোল্লা বলেন, মামলাটি এখন সিআইডিতে রয়েছে, তাই আমরা বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না। তবে বাদীর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় থাকলে আমরা তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো। তাদেরকে আইনগতভাবে সকল সহযোগিতা প্রদান করবো।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার