১১ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিকদের লাগাতার ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বরিশাল নদী বন্দর। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী গত সোমবার রাত ১২টা ১মিনিট থেকে যাত্রী, পণ্য ও জ্বালানিবাহী সকল নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নৌপথের যাত্রীরা। অপরদিকে পণ্য ও জ্বালানীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে।
পূর্ব ঘোষিত দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মঙ্গলবার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। এ কারণে মঙ্গলবার ভোর থেকে স্থানীয় এবং অভ্যন্তরীণ রুটের কোন যাত্রীবাহী নৌযান গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি বরিশাল নদী বন্দর থেকে। নৌযানগুলো বন্দর থেকে ছেড়ে মাঝ নদীতে নোঙ্গর করে রাখা হয়। এতে বিপাকে পড়েন নৌপথের নিয়মিত যাত্রীরা। তারা নদী বন্দরে এসে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
শুধু যাত্রীবাহি নয়, জ্বালানী এবং পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় বাজারে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে জানান বরিশালের ব্যবসায়ী মো. নুর হোসেন মিরন।
আন্দোলনরত নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বরিশাল জেলা সভাপতি আবুল হাসেম মাস্টার জানান, দাবী আদায়ে সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন তারা। ওই সময়ের মধ্যে তাদের দাবী আদায় না হওয়ায় লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছে নৌযান শ্রমিকরা। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তারা।
কর্মবিরতি ফলে জনদুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের দাবি মেনে নিলে ওই সময় থেকেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবেন তারা।
এর আগে ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর একইভাবে কর্মবিরতি দেওয়া হয়েছিল। এরপর সরকার ও মালিকপক্ষ কয়েকটি সভা করে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেওয়ায় ওই সময় কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত দাবি আদায় না হওয়ায় বাধ্য হয়ে এই কর্মসূচী দেয়ার কথা জানান নৌযান শ্রমিক নেতারা।
শ্রমিকদের ১১ দফা দাবির মধ্যে আছে নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জাহাজে কর্মরত নৌ শ্রমিকদের মালিক কর্তৃক বিনামূলে খাবারের ব্যবস্থা করা, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র প্রদান এবং সমুদ্র ও রাত্রীকালীন ভাতা নির্ধারণ।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা