২১ মে, ২০১৯ ২০:৫১

দিনাজপুরে বিরল প্রজাতির ধুষর লক্ষ্মী পেঁচা উদ্ধার

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর থেকে

দিনাজপুরে বিরল প্রজাতির ধুষর লক্ষ্মী পেঁচা উদ্ধার

দিনাজপুরে বিরল প্রজাতির ধুষর রংয়ের একটি লক্ষ্মী পেঁচা উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ী এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবিরের বাড়িতে পাখিটি আছড়ে পড়ে। ঠিকমতো উড়তে পারে না। এসময় তাকে ধরে কবুতরের খাঁচায় রাখা হয়। পরে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের জানানো হয়। 

বিকালে বনবিভাগের কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তুহিন সেখানে গিয়ে খাবার এবং ওষুধ দিয়ে সেখানে রাখতে বলেন। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উড়তে পারলেই তাকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি। 

হুতোম পেঁচাকে কেউ পেঁচা, কেউ ধুধু, আবার কেউ লক্ষ্মী বলে থাকে। গ্রাম বাংলাসহ সব জায়গাতেই ‘হুতোম পেঁচা দেখা যেত। তবে মাঝে মধ্যে দেখা গেলেও বিরল প্রজাতির হুতোম পেচা এখন বিলুপ্তির পথে। ওই প্রজাতির উদ্ধারকৃত পাখিটি বিরল প্রজাতির লক্ষ্মী পেচা। এরা রাতে বিচরণ করে বলে এদের নিশাচর পাখি বলা হয়ে থাকে। অনেক সম্প্রদায়ের কাছে পূঁজনীয় একটি পাখি এ পেঁচা। এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকতে পছন্দ করে। বিভিন্ন রকমের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড়, পাখির ছানা, ইঁদুরকে এরা খাদ্য হিসাবে খেয়ে থাকে। পেঁচা সাধারণত গাছের কোটরে কিংবা দালানের ফাঁক-ফোকরে কিংবা বাঁশ ঝাড়ে বসবাস করে। বৃক্ষ নিধনের কারণে বন-জঙ্গল কমে যাওয়ায় আবার জমিতে বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার এবং শিকারের কারণে এরা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। বাংলাদেশে প্রায় ১৬ প্রজাতির পেঁচা দেখা যায়। এদের প্রজননকাল নভেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে। এ সময় এরা গাছের ফোকরে বা পুরনো বাসায় ৩-৪টি ডিম পাড়ে। ডিম থেকে বাচ্চা বের হতে প্রায় ৩৫ দিন লাগে। 

হুমায়ুন কবির বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ির আঙিনায় আছড়ে পড়ে। এরপর ঠিকমতো উড়তে পারে না। এসময় তাকে ধরে কবুতরের খাঁচায় রাখি। পরে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের জানায়। উদ্ধার হওয়া সাদা হুতোম পেঁচাটি এখন সচরাচার দেখা যায় না। তবে এটাকে ‘লক্ষ্মী পেচা’ হতে পারে। 

এ ব্যাপারে দিনাজপুর বনবিভাগ কর্মকর্তা ও রামসাগর চিরিয়াখানার তত্বাবধায়ক আব্দুস সালাম তুহিন জানান, উদ্ধারকৃত পাখিটি আসলে ধুসর রংয়ের লক্ষ্মী পেঁচা। এ ছোট পেঁচার চোখের পুরো অংশটি সাদা। ধুসর রংয়ের মাঝে কালো স্পট রয়েছে। এই জাতীয় লক্ষ্মী পেচা বড় বড় গাছের কোটরে থাকে। এরা বাসা বানাতে পারে না। তাই এদের কাক, বিড়াল, বেজী প্রানীর দ্বারা আক্রমনের শিকার হতে হয়। বড় বড় গাছ যেহেতু এখন কমে গেছে তাই এই লক্ষ্মী পোচা দেখা যায় না। আস্তে আস্তে এরা হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি থেকে। অথচ আমাদের স্বার্থে এদের বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর