বরিশালের গৌরনদী পৌর শহরে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া দোকান কর্মচারী মো. বুলবুল হোসেনের লেখাপড়ার খরচের দায়িত্ব নিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. নাসির উদ্দিন।
বুলবুল চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। জিপিএ-৫ পাওয়ার পর উচ্চ শিক্ষার জন্য কলেজে ভর্তির দুশ্চিন্তায় জেঁকে ধরে তাকে। কারণ অর্থাভাবে কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন মেধাবী বুলবুল ও তার বাবা-মা।
এর আগে গৌরনদীর অদম্য মেধাবী বুলবুলের আর্থিক দৈন্যতা নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে দৃষ্টি আকর্ষিত হন গৌরনদীর কৃতি সন্তান সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. নাসির উদ্দিনের। সাথে সাথে তিনি বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে আলাপ করেন গৌরনদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন মিয়ার সাথে। এ সময় তিনি মেধাবী বুলবুলের কলেজে ভর্তিসহ লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ বহনের কথা জানান।
এ খবর অসহায় বুলবুলের পরিবারের কাছে পৌঁছলে তারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। এ সময় বুলবুলের চোখ মুখে ছিল হাঁসির ঝিলিক।
সম্প্রতি বুলবুলের বাবা উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড়দুলালী গ্রামের অসুস্থ্য খলিলুর রহমানের (৬৫) চিকিৎসার জন্য অতিরিক্তি সচিব ড. নাসির উদ্দিনের পরিবার থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা প্রদান করে।
প্রসঙ্গত, এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার দিন বিদ্যালয়ের সহপাঠীরা যখন নিজের ফলাফল শুনে বিদ্যালয়ে আনন্দ উল্লাস করছিল, ঠিক তখন গৌরনদী বাস স্টেশনে একটি মুঠোফোনের দোকানে কাজ করছিল বুলবুল। তখনও বুলবুল জানে না তার পরীক্ষার ফলাফল। কোনো এক সহপাঠী ফলাফল জানানোর জন্য দোকানে গিয়ে বুলবুলকে খুঁজতে থাকে। ওই সময় দোকান পরিষ্কার-পরিচ্ছনাতার কাজ করছিল বুলবুল। সহপাঠী বুলবুলের জিপিএ-৫ পাওয়ার খবরটি দিতেই আনন্দে দোকান মালিককে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বুলবুল।
উপজেলার বড়দুলালী গ্রামের হতদরিদ্র খলিলুর রহমান (৬৫) ও মাতা আলেয়া বেগমের (৪৮) এক ছেলে ও এক মেয়ের সংসার। বাবা দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ্য। ভিটে মাটি বিক্রি করে বাবা খলিলুর রহমানের চিকিৎসা করিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে পরিবারটি। মা আলেয়া বেগম বিভিন্ন বাসায় ঝি এর কাজ করে আর বুলবুল গৌরনদী বাস স্টেশনে ওই দোকানে কর্মচারীর কাজ করে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন