২৫ জুন, ২০১৯ ২২:০১

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে দুই প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে দুই প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগ

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ডামুড্যা উপজেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারি প্রকৌশলী আমীনুর রহমান ও আব্দুল মালেককে মারধর করা হয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল মাদবর, তার ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবর ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাতি ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধ মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। 

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ওই কার্যালয়ে প্রকৌশলীদের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। তারা এ সময় উপজেলা প্রকৌশলী এসএম ইবনে মিজান হাসানকেও গালাগালি করেন।

এ ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তাদের মারধরের অভিযোগ এনে ডামুড্যা থানায় মামলা করা হয়েছে। উপসহকারি প্রকৌশলী আমীনুর রহমান বাদী হয়ে ওই তিন নেতাকে আসামি করে মামলাটি করেন। 

ডামুড্যা থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল মাদবর, তার ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবর ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাতি ইমরান হোসেনে ঠিকাদারী ব্যবসার সাথে যুক্ত। ইমরান হোসন সম্প্রতি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রকল্প থেকে ১০টি শেলাই মেশিন সরবরাহ করার কাজ নেন। ৯২০০০ টাকার ওই প্রকল্পটির বিল উত্তোলন নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ডামুড্যা উপজেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারি প্রকৌশলীদের সাথে তার কথাকাটাকাটি হয়। এর জের ধরে মঙ্গলবার সকালে রুবেল মাদবর, জুলহাস মাদবর ও ইমরান প্রকৌশলীদের কক্ষে যান। সেখানে তারা বিলের চেকে সই করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। মেশিন সরবরাহ ও বিতরণের পূর্ণাঙ্গ কাগজপত্র না থাকায় প্রকৌশলীরা বিলের চেকে সই করতে অপরাগতক প্রকাশ করেন। তখন ওই তিন নেতা উপ-সহকারি প্রকৌশলী আমীনুর রহমান ও আব্দুল মালেককে মারধর করেন। তারা উপজেলা প্রকৌশলী এসএম ইবনে মিজান হাসানকে মারধরের চেষ্টা করেন। তখন তিনি কক্ষের দরজা বন্ধ করে আত্মরক্ষা করেন।

উপ-সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল মালেক  বলেন, এডিপি প্রকল্পের একটি বিলের চেকে সই করা নিয়ে তাদের সাথে কথা হচ্ছিল। বিলের কাগজপত্রে ত্রুটি ছিল। আমরা ওই ত্রুটি সংশোধন করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তারা কাগজপত্র ছারাই বিল দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। আমরা দিতে অপরাগত প্রকাশ করলে তারা মারধর করেন। চরথাপ্পর, কিলঘুসি মেরেছে। লোহার রড দিয়ে পিটিয়েছে। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের পরামর্শে মামলা করা হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী ইবনে মিজান হাসান বলেন, রুবেল মাদবর ও জুলহাস মাদবর এলজিইডির কয়েকটি প্রকল্পের ঠিকাদার। কাজের মান নিয়ে করাকরি করার কারণে তারা আমাদের উপর ক্ষুব্ধ ছিল। তারা প্রায়ই হুমকি দিত, গালাগালি করত। আজ গায়ে হাত তুলেছে। দায়িত্ব পালন করার জন্য এভাবে আমাদের মার খেতে হবে?

জানতে চাইলে ডামুড্যা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল মাদবর বলেন, আমাদের ছোট ভাই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান ছোট একটি কাজ করেছে। ওই কাজের বিলটি দিচ্ছিল না। ১০ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছিল। বিষয়টি জানতে গিয়ে একটু তর্কাতর্কি হয়েছে। আমরা কাউকে মারধর করিনি।

ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা দুইজন উপ-সহকারি প্রকৌশলীকে মারধর করার খবর শুনেছি। তাদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে  ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর শরীয়তপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আনন্দ কুমার ঘোষ বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে ত্রুটি রেখে বিল নেয়ার চেষ্টা করা হবে। বিল দিতে না চাইলে কর্মকর্তাদের মারধর করা হবে। এটা হতে পারে না। আমরা এ অন্যায় সহ্য করব না। যারা কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর