বরিশালের উজিরপুরে সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙনের কবল থেকে আশোয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষার দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় স্কুলের সামনে সন্ধ্যা নদীর তীরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বক্তব্য রাখেন। এ সময় নদী ভাঙনের হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষায় বিশেষ দোয়া-মোনাজাত করা হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, উজিরপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙনে গত কয়েক বছরে গুঠিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের আংশিক নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে গৃহহারা হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। স্থানীয়রা জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্ব তন কর্মকর্তাদের কাছে বিভিন্ন সময় নদী ভাঙনের কবল থেকে তাদের সহায়-সম্পদ রক্ষার দাবি জানালেও তেমন কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
গুঠিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, গত কয়েক বছরে সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, মসজিদ, ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। এখন এলাকার একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সম্প্রতি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ওই এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন প্রতিরোধে কিছু জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশ দিলেও তা একেবারেই অপ্রতুল। ঠিকাদার দায়সারাভাবে জিও ব্যাগ ফেলায় বস্তাগুলোর বালু পানিতে ধুয়ে গেছে।
আশোয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোসলেম হাওলাদার জানান, বর্তমানে নদীর পানি কমতে থাকায় তীব্র স্রোতে নদীর তলদেশের মাটি সরে গিয়ে স্কুল ভবনের বিরাট অংশ জুড়ে ফাঁটল ধরেছে। এ অবস্থায় স্কুল ভবনে ক্লাস নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভাঙন আতঙ্কে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে। যারা আসছে তাদের স্কুলের বারান্দায় ক্লাস নেয়া হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাছলিমা বেগম ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঝুঁকি এড়াতে পার্শ্ববর্তী একটি স্থানে অস্থায়ীভাবে ক্লাস নিতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার মো. রেজাউল করিম জানান, বিশেষ বরাদ্দের আওতায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে আশোয়ার স্কুল সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীতে ৪ হাজার ৪১৩টি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। তবে নদীর গভীরতা অনুযায়ী জিও ব্যাগ অপ্রতুল হয়েছে। নতুন বরাদ্দ পেলে শীঘ্রই স্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন