পাবনায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মামলা তুলে না নেওয়ায় এক দম্পতিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মাথার চুল কেটে ও সিগারেটের ছ্যাকা (আগুনে) দিয়ে পৈচাশিক নির্যাাতন করেছে দুবৃত্তরা। সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের মাদারবাড়িয়া গ্রামে শনিবার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে। আহত দম্পতি সখিনা খাতুন (৩৫) ও তার স্বামী জিলাল প্রামানিক (৪৫) বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নির্যাতনের শিকার ওই দম্পতির মেয়ে কাজলী জানান, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে আমাদের এলাকার শাহাজাহন, খাইরুল, বিপ্লব, ফরিদ ও তৈজদ্দিনসহ ৬/৭ জনের একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাড়িতে এসে তার মা ও বাবাকে তুলে নিয়ে যায়। মারধর করে বাড়ির পাশের একটি নারিকেলের গাছের সঙ্গে বাবাকে বেঁধে আমার আম্মাকেও ব্যাপক মারধর শুরু করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা আমার মার মাথার চুল কেটে দেয় এবং সিগারেটের আগুন দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ওই সন্ত্রাসীরা যাবার সময় বাড়ি ঘরে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সখিনা খাতুন জানান, স্থানীয় শাহজাহান ও তার সহযোগীরা আমাদের বাড়ির ২৩ শতাংশ জমির দলিল জাল করে দখলের পায়তারা করলে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে মামলা চলে আসছে। ওই মামলায় শাহজাহান আলীসহ মারুফ হোসেন, বকুল হোসেন ও জনিকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিরা আমাদেরকে বিভিন্ন সময়ে প্রাণনাশের হুমকিসহ ইতিপূর্বেও বিভিন্ন সময়ে বাড়িঘর ভাংচুর ও হামলা করে।
চিকিৎসাধীন জিলাল প্রামানিক বলেন, আমি কারখানায় কাজ করি। আমার সামান্য জমির কাগজ জাল করে দখলের অপচেষ্টা করেছে শাহজাহান ও তার লোকজন। আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করায় একের পর এক হুমকি দিয়ে আসছিল। তারা মামলা তুলে না নিলে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে আমাদের।
এ ব্যাপারে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির আহম্মেদ বলেন, ঘটনাটি শুনেছি, ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল গিয়ে সত্যতা পেয়েছে। ইতিমধ্যেই সখিনা খাতুন বাদী হয়ে ৫জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩/৪জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ