রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন ও তার ছেলেকে চাকরিচ্যুত করার ঘটনায় দিনাজপুর সদর উপজেলার এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার-ভূমি) মো. আরিফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার এস এম তরিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সেই মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চালক পদে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা দিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি।
সোমবার সকালে দিনাজপুর সদর উপজেলার ৬ নম্বর আউলিয়াপুর ইউনিয়নের জুগিবাড়ী গ্রামের সেই মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়ি যান রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কে এম তারিকুল ইসলাম ও হুইপ ইকবালুর রহিম। সেখানে তারা মরহুমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এসময় হুইপ ইকবালুর রহিম মরহুম মুক্তিযোদ্ধার ছোট ছেলে নুর ইসলামকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চাকরির ঘোষণা দেন। আগামী ১ নভেম্বর থেকে নুর ইসলাম চাকরিতে যোগদান করবেন।
কবর জিয়ারত ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কে এম তারিকুল ইসলাম জানান, রাষ্ট্রীয় সম্মান ছাড়া মুক্তিযোদ্ধার দাফন এবং মুক্তিযোদ্ধা সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দিনাজপুর সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাকে প্রত্যাহার করে হলো। সেই সঙ্গে তাকে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভূমি অফিসে পদায়ন করা হয়েছে।
এব্যাপারে বিভাগীয় পর্যায়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির একক সদস্য অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেন তদন্ত করছেন। তদন্তে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ছেলেকে চাকরিচ্যুত করার অভিমানে দাফনের সময় রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চাননি অভিমানী মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন। মৃত্যুর দুইদিন আগে নিজের ক্ষোভ-দুঃখের কথাগুলো লিখে যান স্বজনদের কাছে। ২৩ অক্টোবর সকাল ১১টায় মারা গেলে পরদিন ২৪ অক্টোবর ইসমাইল হোসেনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করা হয়। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা শেষ বিদায় নেন প্রশাসনের স্যালুট ও বিউগলের করুণ সুর ছাড়াই। এ ঘটনায় বিভাগীয় কমিশনার গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শুরু হয়েছে। ২৬ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে এসে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেন। এ সময় তদন্ত কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নুর ইসলাম।
দিনাজপুরের এসিল্যান্ড অফিসে (সহকারী কমিশনার ভূমি) অস্থায়ী ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের ছোট ছোলে নুর ইসলাম গত ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর গাড়িচালক পদে চাকরি পান।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন