কুড়িগ্রামে ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে কমলেও ভাটিতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে বিপদসীমার অনেক ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ১০৩ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে ওয়াপদা সূত্র জানায়। এ অবস্থায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়ে আড়াই লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্যা দুর্গত এলাকায় খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও জ্বালানি সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের দুর্গম চর ও চিলমারীর অষ্টমীর চরসহ অনেক চরে এখন বন্যার্তদের কষ্ট মারাত্মক।
এদিকে গত দুইদিনে বন্যার পানিতে ডুবে দুই শিশুসহ ৩ জন মারা গেছে। নাগেশ্বরীর দুই শিশু ছাড়া বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে বুধবার বিকেলে চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মাচাবান্দা নালারপাড় গ্রামে রাকু মিয়া (২০) নামে এক যুবক মারা গেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান জানান, গত কয়েকদিন আগের বন্যায় ১০ হাজার হেক্টর জমির আমনের বীজতলা, পাট ও শাকসবজিসহ নানা ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় দফা বন্যায় এ পর্যন্ত একই রকমের ৮শ হেক্টর জমির ফসল নতুন করে নষ্ট হয়েছে। এ কারণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, জেলা মৎস কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, ইতিমধ্যে জেলায় ২ হাজারের বেশি পুকুর ও জলাশয়ের মাছ বন্যায় বের হয়ে গিয়েছে। অন্তত ৪৩০ মণ মাছ বের হয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকার পোনা ও চাষ করা মাছ ক্ষতি হয়েছে। বানভাসীদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও অনেকেই তা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বরাদ্দকৃত ৪০০ মে. টন চাল, ১১ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার উপজেলা পর্যায়ে প্রদানের জন্য ইউএনওদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন