বরগুনায় গত বুধবার (২১ অক্টোবর) ভোররাত থেকে একটানা ভারী বর্ষণে জেলা শহরসহ ৬টি উপজেলা সদর ও ইউনিয়ন সমূহের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বসতঘর ও রাস্তা বৃষ্টির পানিতে ধসে গেছে। বরগুনা, বেতাগী, পাথরঘাটা ও আমতলী পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে জনজীবনে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) সকাল ৯ টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। বরগুনা জেলায় বিভিন্ন বেড়ীবাঁধের বাহিরে অবস্থিত আবাসন, আশ্রয়ন এবং বস্তিবাসীরা বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এছাড়া বেড়ীবাঁধের বাহিরে অবস্থিত কয়েক সহাস্রাধিক বসতবাড়ি বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, শুক্রবার বেলা ১২ টা পর্যন্ত বিষখালী, বুড়ীশ্বর (পায়রা) বলেশ্বর নদীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে উপকূলের অনেক বাড়িতে রান্না করার মতো অবস্থা নেই। বরগুনা পৌরসভার, চরকলোনী, কলেজ সড়ক, কলেজ ব্রাঞ্চ সড়ক, ব্যাংক কলোনী, আমতলা পাড়, বাজার সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক, গোলাম সরোয়ার সড়ক, পশু হাসপাতাল সড়কে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।দু'দিনের বেশি অব্যাহত ভারী বর্ষনে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সাধারণ জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। সবকিছু স্থবির হয়ে আছে। জেলা সদর ও পাথরঘাটা, বেতাগী, বামনা উপজেলায় শুক্রবার সকাল থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বর্ষা থেমে যাবার পরে ক্ষেতে থাকা সবজির ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টির পানিতে বেশ কয়েকটি মাছের ঘের আর পুকুরে পানি বৃদ্ধি পেলেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ৩ নম্বর সংকেত পেয়েই আমরা, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে সকল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নিজ নিজ এলাকার ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য সংগ্রহ করার জন্য বলেছি। শুকনা খাবার প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে চাহিদা মত সরবরাহ করা যাবে ইন শা আল্লাহ।
বরগুনা পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের উদ্যোগে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাদ্যসহ আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মেয়র শাহাদত হোসেন বলেন, অনেকের বসতবাড়ি বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়ায় তাদেরকে শুকনো খাবার পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ