দিনাজপুর পৌর এলাকার প্রায় সব সড়কই খানাখন্দকে ভরা, আবার কোথাও গর্ত। কোথাও কোথাও সড়ক যে আছে বোঝার উপায় নেই। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নাগরিকরা।
শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে এই দুর্ভোগের সময় রাস্তার মোড়ে দৃষ্টিনন্দন রং-বেরংয়ের আলোকসজ্জার পানির ফোয়ারা দেখে অনেক পথচারী বলছেন, ‘এটা তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
জানা যায়, প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী প্রায় ২৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দিনাজপুর পৌরসভায় সড়ক আছে প্রায় ২০০ কিলোমিটার। কিন্তু এসব সড়ক পৌর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না করায় শহরের প্রধান দু-একটি সড়ক বাদে অধিকাংশ সড়কেরই বেহাল দশা। শহরের বাণিজ্যিক এলাকা বাহাদুর বাজার, বালুয়াডাঙ্গা, চাউলিয়াপট্টি, ঘাসিপাড়া, মুদিপাড়া, পাহাড়পুর, ক্ষেত্রীপাড়া, লালবাগ, গোলাপবাগ, সুইহারী, নয়নপুর, বালুবাড়ী, মিশন রোড, রামনগর, মুন্সীপাড়া, উপশহর, পুলহাট, রাজবাটীসহ শহরের প্রায় প্রতিটি এলাকার সড়কের এ বেহাল দশা।
রফিকুল ইসলাম, মধাব চন্দ্রসহ কয়েকজন পৌর নাগরিক বললেন, দীর্ঘদিন থেকে পৌর এলাকার সব সড়কই দুরবস্থা। কোথাও সড়কের কার্পেটিংসহ ওপরের অংশ উঠে গেছে। অনেক স্থানে খানাখন্দক ও গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় এবং সড়ক আর ড্রেনের পানিতে কোনো কোনো এলাকা একাকার হয়ে যায়। সড়ক হয়ে যায় চলাচলের অনুপযোগী।
সড়কের এ অবস্থাতেই শহরে পৌরসভা কর্তৃক কয়েক হাজার অটোরিকশা চলাচলের কথা বলা হলেও চলছে চারগুণ অটোরিকশা। নেই এসব অটোরিকশার নিয়ন্ত্রণ। ফলে শহরের প্রতিনিয়তই দেখা যায় যানজট।
পৌরবাসীর এমন দুরবস্থার মাঝে সড়ক সংস্কার করা না হলেও দিনাজপুর পৌরসভা কার্যালয় চত্বরে একটি সুসজ্জিত আলোকসজ্জার টাওয়ার এবং শহরের জেলরোড মোড়ে দৃষ্টিনন্দন আরেকটি রং-বেরংয়ের আলোকসজ্জার পানির ফোয়ারা স্থাপন করায় অনেকেই টিপ্পনি কাটছেন।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল জানান, দেশের বিভিন্ন এলাকায় গেলে সত্যিই মনে হচ্ছে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে হাঁটছে। কিন্তু দিনাজপুর শহরে তার বিন্দুমাত্র চিহ্ন নেই। রাস্তাঘাট, ময়লা-আবর্জনা আর ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুরবস্থার কারণে পৌরবাসী চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। তিনি শহরের সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তোলার আহ্বান জানান।
দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, পৌর এলাকার সড়ক ও ড্রেন সংস্কারের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অতি দ্রুত কাজ শুরু হবে। ফলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে শহরের আমূল পরিবর্তন হবে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ
