উত্তরের কৃষিনির্ভর জনপদ ঠাকুরগাঁও। দেশের মোট খাদ্য শস্যের একটা বড় অংশই উৎপাদিত হয় এখানে। তাই খাদ্য শস্য মজুদের দিক থেকেও এগিয়ে উত্তরের এ জেলা। কিন্তু চলতি বোরো মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে সফল হয়নি খাদ্য বিভাগের সরকারি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান।
সরবরাহের চুক্তি করে শর্তভঙ্গ করেছেন ৮৬০ জন চাল কল মালিক। জেলা খাদ্য অধিদপ্তরকে এক ছটাক পরিমাণ চালও দেয়নি তারা। তবে দায় এড়াতে সামান্য চাল দিয়েছেন ১৩৪ হাস্কিং মিল মালিক।
জেলা খাদ্য বিভাগ সুত্রে জানা যায়, এবারের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ৩০৯ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২ হাজার ১৩২ মেট্রিক টন। আর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে ১৭ হাজার ৭২২ মেট্রিক টন। ফলে এবার এ জেলায় সরকার ঘোষিত চাল সংগ্রহ পুরোপুরি অর্জিত হয়নি।তবে যেসব রাইস মিলের সঙ্গে খাদ্য বিভাগের চুক্তি এবং নির্ধারিত সময়ের পরেও চাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয়ভাবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি বলে জানান জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক।
এছাড়াও জেলা খাদ্য বিভাগের তথ্য মতে জেলার হরিপুর ও রাণীশংকৈল উপজেলায়ও এবার ধান-চাল সংগ্রহ হয়েছে কম পরিমাণে।
চাল ব্যবসায়ী ও মিল মালিক মকবুল হোসেন বলেন, প্রতি কেজি ৩৬ টাকা চাল ও ২৬ টাকা মূল্যে ধান কেনার ঘোষণা দেয় সরকার। তবে সরকারি দরের চেয়ে বাজারে প্রতি কেজি চাল ৬-৭ টাকা বেশি ছিল। তাই লোকসান হবে জেনেই চুক্তি করার পরও শর্ত ভঙ্গ করেছেন মিল মালিকরা।
চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজু বলেন, এ জেলার সব অটো মিলে চাল উৎপাদন হয় না । চুক্তি করা সত্ত্বেও সঠিক সময়ে চাল সরবরাহ করে না তারা। পক্ষান্তরে বেশিরভাগ চাতাল ব্যবসায়ীদের কালার সর্টার না থাকায় অন্যের কারখানা গিয়ে চাল সর্টার করতে হয়।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহা. মনিরুল ইসলাম জানান, এ জেলায় ১ হাজার ৬৬০টি অটো ও হাসকিং চাল কল রয়েছে। সব মিল মালিক বোরো মৌসুমে চাল সরবরাহ করবে বলে খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। তবে তাদের মধ্যে ৮৬০ জন চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
তিনি আরো জানান, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধান চালের মূল্য বেশি থাকার কারণেই এ বিপর্যয় ঘটেছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই