নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত একসঙ্গে তিন মাসের বেতন ও ভর্তি ফিসহ অন্যান্য ফি আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে অভিভাবকরা।
তাদের অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের যোগসাজশে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে এ অর্থ আদায় করা হয়েছে। তবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্য এই অভিযোগ নাকচ করে বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ এ ধরনের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয়।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ফটকের সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন অভিভাবকরা। তাদের দাবি, শিক্ষার্থীদের চাপ দিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকা একসঙ্গে আদায় করা হয়েছে।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক মীর ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে ৩৫ জন অভিভাবক স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, করোনা সংকটে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের চাপ প্রয়োগ করে ৭৫০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
অভিভাবক আবুল কাশেম স্বপন বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বেতন ও অন্যান্য ফি ২৯ নভেম্বরের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশের পরে ওই অর্থ সকল শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সাদা কাগজে আদায় করা হয়। সাদা কাগজে অদৃশ্য ফিসহ শিক্ষার্থী প্রতি ১৮০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা চাপ দিয়ে আদায় করা হয়েছে। যা বেশিরভাগ অভিভাবকের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতির মুখে আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলন করছি।
মানববন্ধন ও সমাবেশে অভিভাবকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিবি খাদিজা, ফাহমিদা আক্তার, বিবি ফাতেমা, নাছিমা আক্তার, আবুল কাশেম স্বপন ও আতাউল হক প্রমুখ।
এ বিষয়ে মানিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, সকল শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সমান হারে টাকা নেওয়া হয়নি। এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক মীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ্ কামাল পারভেজ জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এ ধরনের অজুহাতে অর্থ আদায়ে আগে থেকেইে নিষেধাজ্ঞা ছিল। একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে আমরা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করব।
বিডি প্রতিদিন/এমআই