ঢাকা থেকে বরিশালগামী একটি লঞ্চের ছাদে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর রাতে এমভি সুন্দরবন-১১ লঞ্চের ছাদের চিমনির আড়ালে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ করেছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
নিহত যাত্রীর নাম মো. শামীম হাওলাদার (২৫)। তিনি ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নের জামুরা গ্রামের মো. খালেক হাওলাদারের ছেলে। তার বাবা-মা উভয়ে অন্যত্র বিয়ে করে সংসার করছে। একই ইউনিয়নের কোকিলা গ্রামে মামা নয়ন খানের বাড়িতে থেকে বড় হয় সে। শামীম নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার কুতুবাইন এলাকার ২ নম্বর রোডের ৪৪ নম্বর প্লটের আবির ফ্যাশন নামে একটি গার্মেন্টে চাকরি করতো।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাতে এমভি সুন্দরবন-১১ লঞ্চে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় শামীম। সে ছিলো ওই লঞ্চের ডেক যাত্রী। আসার সময় সে তার বন্ধু ও সহকর্মী রিপনের ব্যাগ নিয়ে ঝালকাঠির নলছিটির গ্রামের বাড়ি রওয়ানা দেয়। ভোর রাত ৪টার দিকে লঞ্চটি বরিশাল নদী বন্দরে নোঙ্গর করার পর অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা শামীমকে ওই লঞ্চের তৃতীয় তলায় ইঞ্জিনের ধোয়ার চিমনির আড়ালে নিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। সকাল ৬টার দিকে লঞ্চের পরিচ্ছন্ন কর্মী আবুল কালাম ছাদে ধোয়া মোছার কাজ করতে গেলে একটি রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়।
নিহত যাত্রী ওই লঞ্চের ডেক যাত্রী ছিলো বলে জানিয়েছেন লঞ্চের সুপারভাইজার মো. সিরাজুল ইসলাম।
বরিশাল সদর নৌ থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দেয়া খবরের ভিত্তিতে তারা ঘটনাস্থল গিয়ে সুরতহাল শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
এদিকে, প্রথমে নিহতের পরিচয় পাওয়া না গেলেও সিআইডি তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের পরিচয় উদঘাটন করেছে। তাকে লঞ্চের ছাদে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হলেও কেন এবং কারা তাকে হত্যা করছে প্রাথমিকভাবে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি সিআইডি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন সিআইডি’র পরিদর্শক নুরুল আলম তালুকদার।
তিনি আরও জানান, লঞ্চের ফ্যান্টারে একটি আইডি কার্ড পাওয়া যায়। কার্ডটি ছিলো শামীমের বন্ধু ও সহকর্মী রিপনের। তিনি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রয়েছেন।
মুঠোফোনে রিপন জানায়, শামীম গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য তার ব্যাগটি গত সোমবার চেয়ে নিয়েছিলো। ওই ব্যাগের মধ্যে তার আইডি কার্ড ছিলো।
ওই আইডি কার্ডের সূত্র ধরে নিহতের পরিচয় উদঘাটন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডি’র পরিদর্শক মো. নুরুল আলম তালুকদার।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন