নাটোরের মালঞ্চি, ইয়াছিনপুর ও বাসুদেবপুর রেল স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে কয়েক বছর আগে। মাষ্টার ছাড়াই চলছে এসব স্টেশন। স্টেশনে ঝুলছে তালা। সিগনাল ছাড়াই এসব স্টেশন হয়ে চলাচল করে ট্রেন। নাটোর ও আব্দলপুর স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় সিগনাল। আন্তনগর ট্রেনগুলো দাঁড়ায় না এসব স্টেশনে। পাবর্তীপুর থেকে খুলনাগামী রকেট মেইল ও রাজশাহীগামী উত্তরা এক্সপ্রেস নামের দুটি লোকাল ট্রেন থামে এসব স্টেশনে।
ট্রেন দু’টি তাদের মতো করেই এসব ট্রেনে এসে থামে এবং যাত্রি উঠিয়ে চলে যায়। ট্রেন দু’টির নির্ধারিত সময় বেধে দেওয়া থাকলেও যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ট্রেনের আগমন জানতে লাইনের অদূরে তাকিয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের।
মাস্টার বা টিকিট কাউন্টার না থাকায় ট্রেনের ভিতরেই যাত্রীদের টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। এসব স্টেশনে চারটি পৃথক রেলক্রসিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যবহারের উপযোগী লাইন মাত্র একটি। সেটাও প্লাটফরম থেকে বেশ দূরে। ফলে মই বা চা দোকানের ব্রেঞ্চ পেতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে উঠানামা করতে হয় যাত্রীদের। এসব স্টেশনে ট্রেন ধরতে আসা যাত্রীদের দুর্ভোগ এখন নিত্য সঙ্গি।
বাগাতিপাড়া পৌরমেয়র মোশাররফ হোসেন বলেন, কাদিরাবাদ সেনানিবাস ও একটি আর্মি টেকনিক্যাল বিশ্বদ্যিালয়সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই স্টেশনকে ঘিরে। কিন্তু পৌর এলাকার জনগুরুত্বপূর্ণ মালঞ্চি স্টেশনসহ বাগাতিপাড়া উপজেলার তিনটি স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ায় সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন এই উপজেলার মানুষ। দুটি লোকাল ট্রেন এই মালঞ্চি স্টেশনে দাঁড়ালেও তা নিজের ইচ্ছায় চলাচল করে। যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় স্টেশনে। আবার ট্রেন এসে থামে প্লাটফরমের বাইরের লাইনে। ফলে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধী মানুষদের ট্রেনে উঠতে নামতে কষ্ট হয়। তিনি স্টেশনটি পূর্বের ন্যায় পুনরায় চালুর দাবি জানান।
নাটোর রেল স্টেশনের স্টেশন মাষ্টার অশোক কুমার চক্রবর্তী বলেন, জনবলের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ এসব স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মূলত লোকবল সংকটের কারণে স্টেশনটির এই দুরাবস্থা। স্টেশনগুলি পুনরায় চালু করতে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
রেল পথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য এবং নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল জানান, স্টেশনগুলি কেন বন্ধ এবং এগুলো চালুর জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কিনা এবিষয়ে রেলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন। একই সাথে পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপকের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলেছেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল