কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের এক ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে কাজ করার অভিযোগে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃত উপ-সহকারী কর্মকর্তার নাম মো. নজরুল ইসলাম। তবে অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
বুধবার ঘুষ নিয়ে কাজ করার অভিযোগে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। ইতোমধ্যেই ঘুষ নেয়ার ব্যাপারে তদন্ত করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা. জিলুফা সুলতানা।
অভিযোগে জানা যায়, ওই উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জমির মালিকানা নির্ধারণে নামজারি ও খারিজ করতে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দাবি করেন জমির বিভিন্ন কাজে আসা ব্যক্তিদের কাছে। এছাড়া তিনি জমির পরিমাণ কিংবা ব্যক্তির অবস্থা দেখে ঘুষের টাকার পরিমাণ কম-বেশি করতেন। দীর্ঘদিন যাবত এ অবস্থা তার অফিসে চলতে থাকায় ইউনিয়নের ভুক্তভোগীরা অতিষ্ট হয়ে উঠেন।জনৈক ফাতেমা বেগমের অভিযোগ, আমার জমির নাম খারিজের জন্য ৫ হাজার টাকা দেই। কিন্তু তিনি টাকা নিলেও মাসের পর মাস কোন সমাধান দিতে পারেননি।
অপরদিকে, এক বিধবা নারী রোদেলা বেগম জানান, তার জমির নাম খারিজের জন্য ৬ হাজার টাকা তিনি দাবি করলে আমি তাকে তিন হাজার টাকা দেই। পরে আর কোন টাকা দিতে না পারায় তার জমি খারিজ হয়নি।
অপর এক ভুক্তভোগী আব্দুল কালাম জানান, আমি আমার জমির খাজনা দিতে গিয়েছিলাম। তিনি আমার নিকট ৮২ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে কয়েক দিন ঘোরাঘুরি করে জনৈক প্রভাবশালীর সহযোগিতায় তা ১৫ হাজার টাকায় করে দেন।
এ ব্যাপারে আন্ধারীঝাড় ইউপি চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ খোকন জানান, ওই উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ‘জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পে’ টাকার বিনিময়ে তালিকা করারও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তবে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম দাবি করে বলেন, তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সরকারি চাকরি আচরণ বিধি লঙ্ঘণ করে তিনি মিডিয়ায় বক্তব্য দিতে পারেন না। তাই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন বিষয়টি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত সত্য জানা যাবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন