ফরিদপুরের সদরপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে একটি পরিবারের সকলকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন ও বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলার আসামিরা এখনও রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। মামলা করায় আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে মামলা তুলে নিতে বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। ফের সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে উক্ত পরিবারের সদস্যরা এখন এলাকা ছেড়ে অন্যত্র থাকতে বাধ্য হচ্ছে। আলোচিত এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি চান স্থানীয়রা।
প্রাপ্ত অভিযোগ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের ছাহের আলী বক্স ও ডাঙ্গী গ্রামের আব্দুস সামাদ বেপারীর সাথে স্থানীয় প্রভাবশালী শেখ মনোয়ার গংদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিরোধের জের ধরে বিভিন্ন সময় সামাদ বেপারীর পরিবারের উপর নির্যাতন হয়। গত ২৩ জানুয়ারি ভোরে শেখ মনোয়ার তার দলবল নিয়ে সামাদ বেপারীর বাড়িতে হামলা চালায়। হামলার এক পর্যায়ে সামাদ বেপারীর পরিবারের নারীসহ কয়েকজনকে গাছের সাথে বেঁধে তাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়।
এসময় হামলাকারীরা সামাদ বেপারীর বসতবাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। হামলাকারীরা গাছের সাথে বেঁধে কয়েকজনকে নির্যাতন করায় তাদের মধ্যে ৪ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে মারাত্বক আহত অবস্থায় সামাদ বেপারীর স্ত্রী চম্পা বেগম ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
হামলাকারীরা বসতড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি করে বলে জানান সামাদ বেপারী। এ ঘটনার পর সামাদ বেপারী বাদি হয়ে শেখ মনোয়ার, কুদ্দুস ওরফে কুদু ফকির, শেখ আলহাজ্ব, শেখ আদেলউদ্দিন, শেখ ইলিয়াস, শেখ ইব্রাহিমসহ ১৫ জনকে আসামি করে সদরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিরা প্রাণনাশের হুমকিসহ গ্রাম ছাড়া করার ঘোষনা দেয়। মামলা তুলে না নিলে পরিনত ভয়াবহ হবে বলে জানায় মামলার আসামীরা। ফলে প্রানভয়ে গ্রাম থেকে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয় সামাদ বেপারী ও তার পরিবারের সদস্যরা।
সামাদ বেপারী জানান, তারা দরিদ্র বিধায় শেখ মনোয়ার হোসেন গংয়েরা তার জায়গা দখলে দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল। গত ২৩ জানুয়ারি তাদের উপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। পরিবারের নারীসহ কয়েকজনকে গাছের সাথে বেঁধে বেধরোক পেটানো হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, মামলা করার পর মামলা তুলে না নিলে আমাদের খুন করা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে। তাদের হুমকির কারণে পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এখন গ্রাম থেকে পালিয়ে অন্যত্র থাকতে হচ্ছে। আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাওয়ার পাশাপাশি গাছের সাথে বেঁধে বসতবারী ভাঙচুর ও লুটপাটকারীদের বিচার চাই।
এদিকে, গাছের সাথে বেঁধে নির্মম নির্যাতনের ঘটনার সাথে জড়িতরা এখনো রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। প্রকাশ্যে তারা গ্রামে চলাফেরা করলেও পুলিশ তাদের আটক করতে পারছেনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাদের আটক করছেনা।
গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ও বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের সাথে জড়িত শেখ মনোয়ার হোসেনের সাথে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফেনাটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে সদরপুর থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী অফিসার মাসুদুর রহমান জানান, মামলার আসামিরা সকলেই জামিনে রয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ