প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে নির্দেশনা থাকলেও ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের জন্মভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি।
তবে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে, সেগুলোও সারা বছর অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকে। ভাষার মাস আসলেই শহীদ মিনারগুলোকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। ধুয়ে-মুছে প্রস্তুত করা হয় শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় মোট ১ হাজার ৪৬৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ১ হাজার ১০৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩৬৫টি সরকারি, বেসরকারি কলেজ, উচ্চ ও নিম্ন মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা। তবে ১ হাজার ৪৬৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৩০৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে।
জেলার ৩৬৫টি সরকারি ও বেসরকারি কলেজ, উচ্চ ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদালয় ও মাদ্রাসার মধ্যে মাত্র ১৫৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। বাকি ২১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো শহীদ মিনার নেই।
অপর দিকে জেলার ১ হাজার ১০৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১৫৫টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে। বাকি ৯৪৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় ১ হাজার ১০৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সদর উপজেলার ১২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬টি, বিজয়নগর উপজেলার ৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫টি, নাসিরনগর উপজেলার ১২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১২টি, সরাইল উপজেলার ১২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬টি, আশুগঞ্জ উপজেলার ৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬টি, নবীনগর উপজেলার ২১৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৫টি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২১টি, কসবা উপজেলার ১৬৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১২টি এবং আখাউড়া উপজেলার ৫৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪২টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৩৮টি কলেজের মধ্যে ২৩টি, ৮৪টি মাদ্রাসার মধ্যে ১৩টি এবং ২৪৩টি উচ্চ ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, সদর উপজেলার সব কয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকা সত্যিই দুঃখজনক। উপজেলার বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জায়গার স্বল্পতা রয়েছে। যার জন্য ওইসব স্কুলে শহীদ মিনার করা যাচ্ছে না। চলতি অর্থ বছরে ৫০টিতে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
জেলা প্রাথমিক অফিসার মো. খোরশেদ আলম বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারি কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই। সম্প্রতি মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে একই ডিজাইনে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফি উদ্দিন বলেন, পর্যায়ক্রমে জেলার সব কয়টি সরকারি, বেসরকারি কলেজ, উচ্চ ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই