শিরোনাম
৭ মার্চ, ২০২১ ১৩:০০

কুমিল্লায় 'আসিল' মোরগের জমজমাট লড়াই

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় 'আসিল' মোরগের জমজমাট লড়াই

কুমিল্লায় আসিল মোরগের জমজমাট লড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে। খেলোয়াড় মোরগ। চারপাশে বসা দর্শক হিসেবে বসে আছে মানুষ। মোরগের কোন জড়তা নেই।  একটা মোরগ অন্যটির উপর ঝাপিয়ে পড়ছে। দর্শকরা হৈ হৈ শব্দ তুলে উল্লাস প্রকাশ করছে। জয়ের জন্য মোরগ প্রাণপণ লড়াই করে। হেরে যাওয়া মোরগ মাঠ ছেড়ে চলে যায়। লড়াই দেখে খুশি দর্শকরা। টান টান উত্তেজনার মোরগ লড়াইয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দল জয়ী হয়। 

গতকাল শনিবার (৬ মার্চ) বিকালে কুমিল্লা নগরীর ভাটপাড়ায় এ মোরগ লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। সাত ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জিতেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দল, একটি জয় পায় কুমিল্লার দল। বাকি গুলো ড্র হয়েছে। এবারের আসরের আয়োজন করে কুমিল্লা জহির ব্রাদার্স।  আমন্ত্রিত হয়ে কুমিল্লায় খেলতে এসেছে ব্রাহ্মণবড়িয়ার সূর্য কিরণ ক্লাব।  

সূত্র জানায়, লড়াইয়ের জন্য দু'টি ক্লাবের ১৮টি মোরগ আনা হয়। চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয় ১৮টি মোরগ। মোরগের আক্রমণ ও ক্ষিপ্রতার ধরণ অনুযায়ী নাম রাখেন মালিকরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্লাবের মোরগগুলোর মধ্যে ব্ল্যাক হিট, ডেবিট টেরা, বিজলি ও খইয়া বেশি আলোচিত। কুমিল্লার গুলোর নাম গলাছিলা টাইগার, সুরমাই, বিল্ডার, পাগলু, ক্ষ্যাপা ও ঈগল।

জহির ব্রাদার্সে প্রতিষ্ঠাতা জহিরুল ইসলাম জানান, এ বছর আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আমন্ত্রণ জানাই। ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই। 

খেলায় আসা দর্শনার্থী আবদুল হালিম বলেন, চমৎকার একটি আয়োজন ছিলো। মোরগ লড়াই আমাদের দেশীয় বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিলো। কালক্রমে তা হারিয়ে যেতে বসেছে। এমন আয়োজনের মাধ্যমে বিনোদনের পাশাপাশি  ঐতিহ্যটিও রক্ষা হচ্ছে।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা মোরগ লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন খলিফা বাদল খন্দকার। তিনি জানান, একটি আসিল  মোরগের দাম ৪০-৫০ হাজার টাকা। জাত বুঝে বাচ্চার দামই হয় ১০-১৫ হাজার টাকা হয়। শৌখিন মানুষই আসিল পালন করে। খাবার, যত্নে কোন ছাড় নেই।  উন্নত খাবার এবং ওষুধ সরবরাহ করা হয় প্রয়োজন মত। এই মোরগগুলোও খুব মালিক ভক্ত। মালিকের সম্মানের জন্য লড়াইয়ে জেতার জন্য তারা প্রাণও দিতে পারে।   

কুমিল্লা আছিল উন্নয়ন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুমন চৌধুরী জানান, বাংলাদেশের গ্রামীণ খেলাধুলার ঐতিহ্যের একটি বড় অংশ ছিল মোরগ লড়াই। কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্লাবগুলো নিয়মিত মোরগ লড়াইয়ের আয়োজন করে যাচ্ছে। আমরা এখনো এই খেলা ধরে রেখেছি। এ ধরণের আয়োজন করতে পেরে আমরা খুশি। 

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন কুমিল্লা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুমন ভৌমিক। তিনি বলেন, আসিল উন্নয়নে কেউ প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সহযোগিতা চাইলে আমরা এগিয়ে আসবো।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর