মূল আসামির নাম ও তার বাবার নামের সাথে হুবহু মিল রয়েছে যশোরের শার্শা উপজেলার দীঘিরপাড়া গ্রামের আশরাফ আলী মিন্টু মোল্লার। আর সে কারণেই পুলিশ ভুল করে আশরাফ আলী মিন্টু মোল্লাকে আটক করে। বিনা দোষে চার মাস জেল খাটতে হয় তাকে। শেষপর্যন্ত বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট বা ব্লাস্টের সহায়তায় বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি।
ছাড়া পাওয়া আশরাফ আলী মিন্টু মোল্লা বেনাপোলে দীঘিরপাড় এলাকার মৃত মোহর আলী মোল্লার ছেলে। তিনি রিক্সাভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কখনও কখনও দিনমজুরের কাজও করতেন। তিনি বলেন, ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে স্থানীয় চৌকিদার কালা কবিরকে নিয়ে তার বাড়িতে যান বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই মাসুম। তার এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত দীঘিরপাড় এলাকার মৃত মোহর আলীর ছেলে আশরাফ আলী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেওয়া আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানার কপি দেখান ও তাকে আটক করেন। গ্রেফতারি পরোয়ানার আশরাফ আলী তিনি নন- এ কথা জানানোর পরও পুলিশ তাকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। পরদিন সকালে তার পরিবারের লোকজন তার জন্মনিবন্ধন সনদের কপি নিয়ে থানায় গেলেও তাকে ছাড়া হয়নি। এরপর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
আশরাফ আলী মিন্টু মোল্লা আরও বলেন, কারাগারে দরবার ফাইলে তিনি অভিযোগ করেন আশরাফ আলীর পরিবর্তে তাকে জেল খাটতে বাধ্য করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। গত শনিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে যান লিগ্যাল এইড কমিটির সচিব। এসময় মিন্টু তার কাছেও বিষয়টি জানান। এরপর লিগ্যাল এইডের আইনজীবীরা বিষয়টি আদালতকে অবহিত করেন। আদালত কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক মিন্টুকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
এদিকে আদালত মিন্টুকে মুক্তি দেওয়ায় তার স্ত্রী ফাহিমা বেগম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, কিছুদিন পরে হলেও তার স্বামী ন্যায়বিচার পেয়েছেন। ব্লাস্টের কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট মোস্তফা হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগটি আসার পর আদালতে কাগপত্র উপস্থাপন করে মিন্টুর মুক্তির আবেদন করি।
তিনি বলেন, মিন্টুর নামের প্রথম অংশ ও পিতার নাম মূল আসামির নাম ও পিতার নামের সাথে মিলে যাওয়ায় পুলিশ তাকে আটক করেছিল। পুলিশ একটু সতর্ক হলে ও ভালভাবে যাচাই বাছাই করলে একজন নিরপরাধ মানুষকে চার মাস জেল খাটতে হতো না।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ
