দিনাজপুরে ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। জেলার সদর জেনারেল হাসপাতাল ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালেই ভিড় করছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা। হাসপাতালের সিট না পেয়ে অনেক রোগীকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে হাসপাতালের মেঝে বা করিডোরে।
রোগীদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশী। আবহাওয়া পরিবর্তনে তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণে ডায়রিয়ার জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান।
দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে কয়েকদিন থেকেই দিনে গরম ও রাতে হালকা শীত। তাপমাত্রার এই পার্থক্যের কারণে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব। বিশেষ করে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। পাতলা পায়খানা ও বমি দেখা দেওয়ায় স্থানীয়ভাবে চিকিৎসার ফল আশানুরূপ না হওয়ায় বাধ্য হয়েই রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। এই কারণে দিনাজপুরের হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে এসব রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে চিকিৎসকরা হিমসিম খাচ্ছেন।
গত দুদিনে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে ৫১জন, অরবিন্দ শিশু হাসপাতালে ৩৩ এবং বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একদিনে ভর্তি হয়েছে ২২জন। এ পর্যন্ত দিনাজপুর জেলায় প্রায় ৩ শতাধিক শিশু, নারী-পুরুষ ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিংসা নিচ্ছেন। কয়েকজন রোগীর স্বজন জানান, 'রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে সিট না পেয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালের মেঝে ও করিডোরে।'
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সোলায়মান হোসেন মেহেদী জানান, 'প্রতি বছরই আবহাওয়া পরিবর্তন হলেই ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগের লক্ষণ শিশুসহ বড়দেরও দেখা দেয়।'
দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ নাজমুল হোসাইন জানান, 'জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর জন্য রয়েছে ৮ সিট। রোগী বেড়ে যাওয়ায় মেঝে ও করিডোরে রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে।'
এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুল কুদ্দুছ জানান, 'আবহাওয়া জনিত কারনেই বেড়েছে এসব রোগীর সংখ্যা। এই সময়ে পানির সংকটের কারণে অনেকে ময়লাযুক্ত পানি ব্যবহার করছেন। তবে বৃষ্টি শুরু হলে এটা কেটে যাবে। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে ফুটপাতের খাবার না খাওয়ায় ভাল।'
তিনি আরও জানান, 'বর্তমানে দেড় শতাধিক রোগী বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ওষুধ মজুদ রয়েছে। শিশুদের ডায়রিয়া প্রতিরোধে অভিভাবকদের সতর্ক থাকার আহবান জানান তিনি।'
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির