১১ এপ্রিল, ২০২১ ১৯:২৪

ধানের সর্বনাশ, চাষির দীর্ঘশ্বাস!

মাসুদ হাসান বাদল, শেরপুর:

ধানের সর্বনাশ, চাষির দীর্ঘশ্বাস!

ধানের জেলা শেরপুর। চারদিকে সবুজ ধান ক্ষেতে বের হচ্ছে বোরো ধানের থোকা থোকা  ছড়া। চাষিদের চোখে মুখে আনন্দের স্বপ্নও শুরু হয়েছিল বাম্পার ফলনের আশায়। এরই মধ্যে গত রবিবার ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় শেরপুরের সর্বত্র এক ভিন্নধর্মী গরম হাওয়ার ঝড়ে ফিকে হতে বসেছে শতশত কৃষকের স্বপ্ন। ঝড়ের সাথে কোনো কোনো এলাকায় শিলাও পড়ে। এই ধরনের ঝড় জীবনে কখনও দেখেননি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মুরুব্বিরা।

এই ঝড় কতটা ক্ষতি করেছে কদিন পর থেকে ধানের এই অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছে।ধানের ছড়ায় নেই ধান, ছড়ায় চিটায় ভরা। জেলার বিভিন্ন জায়গায় ধানের এই চিটার খবর পাওয়া গেছে। এই ঝড়ে ধানের এই অবস্থায় চাষির সর্বনাশ হয়েছে। চারদিকে চলছে কৃষকের কষ্ঠের দীর্ঘশ্বাস। 

জেলার কৃষি বিভাগের মতে রবিবারের ঝড়ো ও গরম বাতাসে পুরো জেলায় ১২শ একর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাস্তবে এই ক্ষতির পরিমান আরও অনেক বেশী বলে ধারনা কৃষকদের। 

শেরপুর সদর উপজেলার সর্ববৃহত বিল রৌহা বিলের চাষি নূর উদ্দিন, দমদমা কালিগঞ্জ এলাকার কৃষক জিন্নাহ আলী বলেছেন, এ গরম বাতাসের ঝড়ে আমাদের বোরো ধান সব শেষ। ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছি। ক্ষেতের ধানের শীষ এখন বাদামি হয়ে বের হচ্ছে। আর যে সমস্ত ধান ৪ এপ্রিলের আগে বের হয়েছে তার সমস্তই চিটা হয়ে গেছে। বড় দুশ্চিন্তায় আছি। এর প্রভাবে সামনে ধানের বড় ধরনের ক্ষতি দেখা দিতে পারে এই বোরো আবাদে- আশংকা কৃষকদের। জেলার বিভিন্ন স্থানে থেকে নিয়মিত ধানের এই ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে সদর, শ্রীবরর্দী ও ঝিনাইগাতি উপজেলায়।

এনিয়ে গত মঙ্গলবার বিভিন্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বোরো ফসল পর্যবেক্ষণ করেছেন ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গাজীপুর (ব্রি)-এর কীটতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ পান্না আলী, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাজী শিরিন আক্তার জাহান, উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.হীরেন্দ্র নাথ বর্মণসহ অন্যান্যরা। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা পর্যবেক্ষণ শেষে বলেছেন কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে ৩৭ থেকে ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রার গরম বাতাস হওয়ার কারণে ধান শীষগুলো শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। 

এ ব্যাপারে জেলা খামারবাড়ির উপ-পরিচালক ড.মোহিত কুমার দে বলেন, জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৯০ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে ক্ষতির পরিমান আরও কিছু বাড়তে পারে। বেশ কিছু কৃষকের অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। সরকার ব্যবস্থা নিলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর